বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২:৫৩

চশমার ফ্রেম

ইসরাত জাহান তন্নি
চশমার ফ্রেম

অনেক দিন হয়েগেছে কলেজ থেকে অবসরপ্রাপ্ত। সকলের সঙ্গে যুক্ত বন্ধন গুলো অসাধারণ ছিল।এতো মায়া যুক্ত মুখ গুলো থেকে বয়সের ফারাকে নয় চাকুরির সম্মাননা থেকে সরে যাওয়ার কারনে কেমন জানি একা লাগে। কতো রকমারি ঘটনার উদঘাটন করা হতো এক সাথে হাসি খুশিতে চা'য়ের চুমুকে আড্ডায় জমে যেত সেকালের আসরগুলো। বৃষ্টিতে ব্রেকের সময় বিরিয়ানি খাওয়া, সুখের আলাপন হওয়া যেন এ আরেকটা পরিবার। সকলের শখ আল্লাদ গুলো কে প্রাধান্য দেওয়া জন্মদিন কিংবা বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান গুলো সত্যি চমৎকার ছিল। অনেক ছাত্র-ছাত্রীর গভীর ভালেবাসা পাওয়া শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ধাপগুলি অনুরণন করে এগিয়ে যাওয়া সকল প্রকারে যেন শুধু প্রাপ্তি আর প্রাপ্তি।

আমার অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার নোটিশ প্রায় একবছর ধরেই সকলের জানাশোনা। আমি দেখেছি এ নোটিশে সকল স্টাফ, কলিগ সহপাঠী শিক্ষকরা মানসিক ভাবে আঘাত গ্রস্ত হয়েছেন। এভাবেই ঘড়ির  কাটা চলতে চলতে আমি বিদায়ের লগ্নে দাড়িয়ে গেলাম আমার স্পষ্ট মনে আছে সেদিনের এ আত্মকহনের চিত্র। কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন ‘তব চঞ্চল আখিঁ, কেন ছলছল হে’ আমি সেদিন দেখেছিলাম সকলের চোখে লুকানো অশ্রু ফোয়ারা। আবার এ ও দেখেছি আড়ালে বসে বসে চুপ্টি করে কঁাদা। এতো দিনের শক্ত একটা শেকড় বিদায় নিচ্ছে ভীষণ দুখের সামীল সকলে। আমার এ বিদায়ের কালে সকলেই আমার জন্য নানাবিধ উপহার সামগ্রী এনেছেন। কেউ দিয়েছেন ফুলের বুকে, প্রতিষ্ঠানের ফ্রেম বঁাধানো ছবি, ডাইরি,সকলের একসাথে কাটানো মুহূর্তের কিছু ফ্রেম বঁাধানো ছবি আবার কেউ কেউ ঘড়ি আবার চশমা। আমি তাদের এ উপহার গুলো একটা বুকের শেল্পে সাজিয়ে রেখেছি শুধু এ উপহার গুলো এটার মধ্যে গচ্ছিত রেখেছি। কারণ এতে অনেক স্মৃতি জরিয়ে আছে। আমি আমার রুমেই জানালাটার পাশে রেখেছি এটাকে। যাতে করে বিকেলের চা'য়ের চুমুকে সে পুরুনো আড্ডা ফিরে পাই।আর নিদ্রার দেশে পারি জমালে যেন সকলে আমার পাহাদার হয়ে থাকে। এক কথায় সর্বক্ষন সকলে আমার পাশে আছে বুঝতে পারি। উপহার থেকে পাওয়া চশমাটা সর্বত্র সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আমাকে দৃষ্টি আকর্ষণ করায় সকল জিনিস পত্রের উপর এবং সে শ্লেপটার উপর। কারণ বয়সের পেক্ষাপটে এখন আর আগের মতো চোখে দেখিনা। অনেক ঝাপ্সা দেখি আর এ চশমাটা পড়লে অনেক টা দূরের জিনিস দেখতে পারি। অনেক দিন হয়ে যাওয়ায় চশমার ফ্রেমটা একটু ক্ষয় হয়ে গিয়েছে। আমার মেয়ে রুহনাফিয়া বলে বাবা আমি আরেকটা নতুন চশমা কিনে আনব আজকে। এটাতো অনেক দিন ধরেই পড়েছো দেখনোনা যার কারনে কিছুটা ক্ষয় হয়েগিয়েছে। আমি বল্লাম মারে এটাতে সকলের ভালোবাসা জরিয়ে আছে তা না হলে একটা চশমার ফ্রেম তো এতোদিন যাওয়ার কথা না। চলে যাক না যেমনটা আছে এ সামান্য ক্ষয়ে কিছুই হবেনাহ। এটা বদল করলে অনেক সম্পৃক্ত অটুট থাকা সম্পর্কের বিচ্ছেদ হতে পারে।আমার এ শেষ বয়সে আমি এ বিচ্ছেদ টানতে চাইনা এ চশমার ফ্রেমেই বাকি জীবন পার করে দিতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়