প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩:২২
স্কুল-কলেজে ফিরতেই শিক্ষার্থীর ব্যাকুলতা -১৬
২৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন থমকে আছে করোনা নামক প্রাণঘাতী ভাইরাসের জন্য
দৈনিক চাঁদপুর কন্ঠের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের জন্য 'স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীর ব্যাকুলতা' শীর্ষক শিরোনামে কথা হয় বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ২০২১-এর এসএসসি পরিক্ষার্থী সানজিদা খানম সেতু মণি'র সাথে। জানতে চাওয়া হয় করোনাকালীন দীর্ঘ সময়ে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।
|আরো খবর
সে বলেন, আমার মতো ২৩ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন থমকে আছে করোনা নামক প্রাণঘাতী ভাইরাসের জন্য। শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান প্রেক্ষাপট দাঁড়িয়ে আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে কী- হবে না!
যদিও সরকার ঘোষণা দিয়েছে, নভেম্বর বা ডিসেম্বর নাগাদ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করে এই পরীক্ষাগুলো নেয়া হবে। কিন্তু তাও শঙ্কার একটি ব্যাপার থেকেই যায়।
বিদ্যালয়ে মেধাবী, চাঁদপুর কন্ঠ ও পাঞ্জেরী বিতর্ক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করা এই শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে দৈনন্দিন পুরনো স্মৃতি স্মরণ করে সে বলেন, বিদ্যালয় বা স্কুল কিছুদিন আগেও এই শব্দটি ছিল আতঙ্কের নাম। রোজ সকালের বায়না ছিল 'না আজকে স্কুলে যাবো না!'
কিন্তু মাত্র কিছুদিনের মধ্যে পুরো দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে গেল। করোনার ভয়াল থাবা আমাদের সবাইকে ঘরবন্দি করে দিল। এখন মনে হয় কবে সেই স্কুলে যাবো, আমার প্রিয় ক্লাস রুমে যাবো, কবে আবার আমাদের প্রাণপ্রিয় স্কুলটি নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে, কবে আবার সেই ছুটির ঘন্টাটি বাজবে, কবে আবার সবাই এক কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাইবো।
করোনার ভয়াবহতায় তার চিন্তা সম্পর্কে সে জানায়, আমরা সবাই জানি করোনা ভাইরাস পুরো পৃথিবীকে স্থবির করে দিয়েছে। চীনের উহান শহরে যখন প্রথম এই ভাইরাসটি আক্রমণ করলো, তখন ভাবতে পারিনি যে এই ভাইরাসটি সারাবিশ্বে এতোটা প্রভাব ফেলবে।
যাই হোক, তারপর যখন আমাদের দেশে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হলো তখন সারাদেশ জুড়ে আতঙ্ক, ভয় আর শঙ্কা। দুমড়ে মুচড়ে গেল অর্থনৈতিক অবস্থাসহ শিক্ষাক্ষেত্র সবকিছুই। এমন কোনো কিছু বাদ নেই, যেখানে করোনার ভয়াল থাবায় প্রভাব পড়েনি। কর্ম জীবন, শিক্ষা জীবন, চাকুরী জীবন সব ক্ষেত্রে করোনা প্রভাব ফেলেছে। আর তখনই পরিচিত হই নতুন নতুন কয়েকটি শব্দ লকডাউন, শাটডাউন, ভেন্টিলেশন, কোয়ারেন্টাইন, অনলাই ক্লাস ইত্যাদির সাথে।
করোনা থেকে তার শিক্ষা সম্পর্কে সে জানায়, এর মধ্যে আমার সবচেয়ে পরিচিত শব্দ অনলাইন ক্লাস। এটি বাংলাদেশ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যার কারণে আমি ঘরে বসে আমার পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পেরেছি এবং সরকারের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে অ্যাসাইনমেন্ট প্রণয়ন। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের নিজেদের মেধা, মনন ও সৃজনশীলতাকে বিকশিত করতে পারছি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বন্ধ হয়ে, প্রতিদিন আগের মতো ক্লাসে অংশগ্রহণের প্রত্যাশায় সে জানায়, ইতিমধ্যে করোনার প্রতিরোধক হিসেবে বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছে। আমাদের বাংলাদেশেও ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়ে গিয়েছে এবং জনগণ দিনদিন ভ্যাকসিন প্রয়োগে আগ্রহী হচ্ছে এবং সরকার আমাদের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা ভাবনা করছে।
সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থণা, আমরা যেনো করোনার ভয়কে জয় করে নতুন উদ্যমে স্বাভাবিক জীবনে এবং আমাদের স্বপ্নের সারথি প্রাণ প্রিয় সেই বিদ্যালয়ে আবার আগের মতো ফিরে যেতে পারি।