রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৬:১৪

স্কুলে ফিরতে শিক্ষার্থীদের ব্যকুলতা-৪

গৃহবন্দিত্ব থেকে অভিভাবকদের সাথে সাথে শিক্ষার্থীরাও মুক্তি চাইছেন

প্রবীর চক্রবর্তী
গৃহবন্দিত্ব থেকে অভিভাবকদের সাথে সাথে শিক্ষার্থীরাও মুক্তি চাইছেন

বিগত বছরের ১৭ মার্চ থেকে মহমারি করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সংসদ টিভি এবং পরবর্তীতে স্কুল পর্যায়ে অনলাইন কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু ছুটির আনন্দে কিছু দিন কাটানোর পর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরতে ব্যকুলতা। এসময় শিক্ষার্থীরা বই ছেড়ে মোবাইল ফোনে আসক্ত হয় পড়ে। তবে অ্যাসাইনমেন্ট শুরু হওয়ার পর থেকে কিছুটা বইমুখি হতে দেখা গেছে। তারপরও যেন তাদের ব্যকুলতা কাটেনি। স্কুলে ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সাতে গল্প, খেলাধুলা এসব নানা বিষয়ে অভ্যস্থ হয়ে উঠা শিক্ষার্থীরা আজ গৃহবন্দি। এই গৃহবন্দিত্ব থেকে অভিভাবকদের সাথে সাথে শিক্ষার্থীরাও মুক্তি চাইছেন।

কথা হয় ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী জয় সাহার সাথে। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কম্পিউটারের কিছু কাজ শিখে সে তার জেঠার সাথে একটি দোকানে দরখাস্ত লেখার কাজ শুরু করেছে। তার কাছে প্রশ্ন রাখা হলো তোমার কোনটা ভাল লাগছে। সহজ উত্তর কলেজে গিয়ে ক্লাস এবং ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা এই বয়সে আমাদের এগুলো ভাল লাগার কথা। তারপরও জীবিকার টানে জেঠার সাথে বসেছি। কলেজ খুলে দিলে ক্লাসে যাবে এই প্রশ্নের জবাবে হাসি দিয়ে বললো, অবশ্যই। দেড় বছর তো ক্লাস না করেই কেটে গেল।

৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী নীলা শনিবার সকালে স্কুল ব্যাগ কাঁেধ নিয়ে বেরোনার সময় সামনে পড়ে। বললাম কোথায় যাচ্ছ। প্রশান্তির হাসি দিয়ে বললো, স্কুলে যাচ্ছি, এসাইনমেন্ট জমা দিতে। স্কুলে যেতে ভাল লাগে এমন প্রশ্নে সে জানায়, স্কুলই ভাল। বাসায় বসে থাকতে আর ভাল লাগে না। চোখে মুখে তার স্কুলে ফিরতে ব্যাকুলাত দেখা গেল।

উম্মে হানি তুবা ও উম্মে হানি সামিয়া নামের মিল থাকলেও তারা দুই বোন নয়। ফরিদগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন ৫ম শ্রেণির এবং একজন ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। শনিবার দুপুরে তাদের কাঁেধ স্কুল ব্যাগ ও হাতে এসাইনমেন্ট এর কাগজ । কাছে আসার ইশারা করতেই কাছে এলো। বললাম কোথায় গিয়েছিলে। চোখে মুখে একরাশ আনন্দের ছটা নিয়ে বললো স্কুলে এসাইনমেন্ট জাম দিতে। স্কুলে যেতে ভাল লাগছে, হ্যা বলেই বাড়ির দিকে দৌড় দিল।

ফরিদগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ৯ম ও ১০ম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট জমা দেয়ার দিন ছিল শনিবার দিন। স্বস্তিকা ও সৌমিক দুই ভাই বোন পড়ে একই ক্লাসে।তাদের বায়না তারা নিজেরা স্কুলে যেয়ে খাতা জমা দিবে। খাতা জমা দেয়া শেষে বাসায় ফিরলো হাসি মুখে। অনেকদনিন পর আবার স্কুলে যাওয়ার আনন্দে। হাতে খাওয়ার জিনিস নিয়ে কথা বলতে বলতে জানালো স্কুলে গিয়ে স্যারদের কাছে এসাইনমেন্ট জমা দিয়েছি। কিন্তু অল্পের জন্য দুই বন্ধু আদ্রিতা ও ঈশানের সাথে দেখা হলো।

শিশুরা সঙ্গপ্রিয়, বন্ধুপ্রিয়। স্কুলে গেলে লেখাপড়ার পাশপাশি বন্ধুদের সাথে খেলাধুলা ও গল্পকরার জন্য স্কুলই আদর্শ স্থান। কথাগুলো বলতে গিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক শিক্ষক বলেন, আমরা এখন প্রতিদিন স্কুলে যাই। সকালে যাই ফিরি বিকাল ৪টায়। আমাদের সময়ে আগের মতো থাকলেও আসলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসে ক্লাস করার আনন্দটা পাচ্ছি না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়