প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৩৮
মাছের ফেরিওয়ালা সজীব বিবিএস শিক্ষার্থী!
সারাসকাল এলাকায় মাছ ফেরি করে যা আয় হয়, সেই টাকা দিয়ে কোনো রকমে চলছে পড়ালেখা আর সংসার।
|আরো খবর
মা তুলশী রানী গত হয়েছেন বহু আগে। ঘরে অসুস্থ পৌড় বাবা। সংসারের হাল সজিবের হাতে। জীবন যুদ্ধে এমন কঠিন সময় পার করার মধ্যদিয়ে ইতিমধ্যে পার করেছে এইচএসসির গন্ডি। এখন পড়ছেন বিবিএস'এ।
সরকারি কোনো পদে অফিসার হওয়ার ইচ্ছে তার। সজিব দাস হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯নং গন্ধ্যর্বপুর (উ:) ইউনিয়নের গন্ধ্যর্বপুর গ্রামের রাধ্যোশ্যাম চন্দ্র দাসের ছেলে। ২ ভাই ২ বোনের মধ্যে সে সবার ছোট।
সজিবের সাথে কথা জানা যায়, ২০১৮ সালে এসএসসি পাশ করেছে, ২০২০ সালে এইচএসসি পাশ করে এখন শাহরাস্তি উপজেলার মেহের ডিগ্রি কলেজে বিবিএস" এর ছাত্র সে।
বহুদিন ধরে সকালবেলা স্থানীয় আড়ৎ থেকে পাইকারি মাছ কিনে বাড়ি বাড়ি ফেরি করে সজিব মাছ বিক্রি করে। মাছ ধরা ও বিক্রি তার পারিবারিক পেশা হলেও পড়ালেখা ও সংসারের হাল ধরা সজিব নিজেই মাছ ফেরি করার কাজ শুরু করেন। মাছ বিক্রি করে বাড়ি ফিরে গোসল সেরে কলেজে যেতে হয় -,এটি রুটিন মাফিক কাজ।
মাছ বিক্রি করে প্রতিদিন তার প্রায় ৩"শ টাকার মতো আয় হয়। তা দিয়ে কোন রকমে চলছে সংসার। ইচ্ছে একটাই পড়ালেখা শেষ করে যে কোন একজন সরকারি অফিসার হওয়া। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজের পাশাপাশি পড়ালেখা তার মূল উদ্দেশ্য।
সজিব দাস আরো জানান, এ পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা পাননি। কোন হৃদয়বান ব্যক্তির সহযোগীতা পেলে তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে পারবে।
বাবা রাধ্যোশ্যাম চন্দ্র দাস জানান, ছোট বেলা থেকে তার ইচ্ছা বড় অফিসার হবে। কিন্তু সামর্থ না থাকায় ভালো করে পড়াতে পারছিনা। সে নিজের চেষ্টায় ডিগ্রী পর্যন্ত গিয়েছে। সরকারেরর বা যে কারো সহায়তা পেলে হয়তো লেখা পড়াটা ভালোভাবে শেষ করতে পারবে।
সজিবের সাবেক কলেজ কাঁকৈরতলা জনতা কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক পাটোয়ারির বলেন, সজিব আমাদের ছাত্র ছিলো। সে খুবই অসহায় এবং মেধাবি। আর্থিক অনটনের কারণে বেশিদুর এগুতে পারছে না। আমাদের কলেজে থাকতে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করছি।
স্থানীয় গন্ধব্যপুর ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ হিরা চাঁদপুর কন্ঠকে জানান, আমি জেনেছি সে কষ্ট করে লেখাপড়া করে। যতদুর সম্ভব সহায়তা করব।