প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২১, ২০:০৪
ফরিদগঞ্জের বালিথুবা সপ্রাবির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত শুরু
অভিযোগকারীর পিছুটান
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩নং বালিথুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা তালুকদারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। গতকাল ১০ অক্টোবর রোববার দুপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মনির উজ্জামান সরেজমিন গিয়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলেন। এদিকে তদন্ত কার্য শুরু হলেও অভিযোগকারী তদন্ত চলাকালে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের কথা বলে নিজের অবস্থান থেকে পিছুটান দেন।
|আরো খবর
জানা গেছে, বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের ১৩নং বালিথুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা তালুকদারের বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন প্রাক-প্রাথমিকসহ প্রতিটি শ্রেণিতে নতুন ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্র্ভূতভাবে অর্থ নেয়া, ৫ম শ্রেণি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ডিআর বাবদ অর্থ নেয়া, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সাথে তার অসৌজন্যমূলক আচরণকরাসহ নানা অভিযোগে চলতি বছরের ২১জুন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
সেই অভিযোগের আলোকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফরিদগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মনির উজ্জামান ১০ অক্টোবর দুপুরে বালিথুবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তদন্তে যান। এ সময় তিনি অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর হোসেন, বিদ্যালয়ের এসএমসির সভাপতি জসিম উদ্দিন মিজি, সাবেক সভাপতি ডাঃ হারুনুর রশিদ, অভিভাবক প্রতিনিধিসহ সকলের বক্তব্য শুনেন। এ সময় সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইলিয়াছ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা আনিত অভিযোগের বিষয়ে একটি একটি করে উপস্থাপন করেন। পরে তা তদন্ত করেন। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ভর্তির বিষয়ে অর্থ নেয়ার অভিযোগ বিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিক বেশ কয়েকজন অভিভাবককে ফোন করে অভিযোগ বিষয়ে তথ্য নেন। ৫ম শ্রেণির ডিআর তথ্য নেয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন এ রকম অভিযোগের আলোকে তদন্তকারী কর্মকর্তা শিশুদের সাথে কথা বলে তথ্য নেন। স্লিপের অর্থ বিষয়ে বিদ্যালয়ের এসএমসিন সভাপতি জসিম উদ্দিন মিজিসহ কয়েকজনের সাথে কথা বলেন। এছাড়া সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে অভিযোগ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য নেন।
বিদ্যালয়ের এসএমসির সভাপতি জসিম উদ্দিন মিজি বলেন, অভিযোগকারীর আনিত অভিযোগসমূহ সঠিক নয়। স্লিপের টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থাসহ নানা দৃশ্যমান কাজ করা হয়েছে।
অন্যদিকে অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য ছাড়াও স্কুলের পাশে বাড়ি হওয়ায় অনেক অভিভাবক তার কাছে এ রকম অভিযোগ করেছেন। সেই আলোকে তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তার অভিযোগের বিষয়ে যেই তথ্যগুলো দিয়েছেন, সেগুলো কিছুটা হলেও সত্য রয়েছে। হয়তোবা অভিভাবকরা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যেতে রাজি নন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে আমি তদন্ত এগিয়ে নিতে আগ্রহী নই। কারণ শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মোস্তফা তালুকদার ভাল। আশা করবো তিনি ভবিষ্যতে আরো সচেতন হবেন। অর্থের প্রয়োজন হলে আমিও সহযোগিতা করবো।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা তালুকদার বলেন, অভিযোগ বিষয়ে আমি লিখিত জবাব দিবো। তাছাড়া তদন্তাকারী কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী সকল কাগজ প্রদর্শন করেছি। অভিযোগটি সত্য নয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মনির উজ্জামান বলেন, অভিযোগের আলোকে তদন্ত করা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি, লিখিত নিয়েছি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়া হবে।