শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২৫

পরিবারের দাবি : টাকার লোভেই হত্যা করা হয়েছে রিপনকে

মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল
পরিবারের দাবি : টাকার লোভেই হত্যা করা হয়েছে রিপনকে

শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামে পরকীয়ার জেরে খুন হওয়া বেলায়েত হোসেন রিপনের (৩৫) হত্যার মূল কারণ হচ্ছে টাকা। এমনটিই দাবি করেছেন খুন হওয়া রিপনের স্ত্রী কুলসুম আক্তার শিল্পী ও পরিবারের সদস্যরা। এই মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামি কে আটকের মাধ্যমে হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রহস্য উন্মোচন করে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। রিপনের স্ত্রী জানান, আসামিরা আটক হলেও তাদের আত্মীয় স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে । হত্যার স্বীকার রিপনের মা রাবেয়া বেগম ছেলে হত্যার বিচারের দাবি করেন। সোমবার ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে রিপনের বাড়ি গেলে তার স্ত্রী কুলসুম আক্তার শিল্পী জানান, গত ২২ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে রিপন গরু বিক্রয়ের দেড় লক্ষ টাকা সাথে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। যাওয়ার আগে ২ বছর বয়সী ছোট কন্যাকে আদর করে পাড়ার দোকানে রায়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পরে ফজলুর রহমানের স্ত্রী মোবাইল ফোনে তাঁকে ডেকে নিলে স্বামী-স্ত্রী মিলে রিপনকে খুন করে মাঠের মাঝে লাশ ফেলে রাখে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার আগেরদিন ফজলুর রহমান আমাদের বাড়িতে আসে এবং আমার সাথে কুশল বিনিময় করেন। তার স্ত্রীর সাথে এমন কোন ঘটনার যোগসূত্র থাকলে তিনি আমাকে অবশ্যই জানাতেন। আমি স্ত্রী হিসেবে আমার স্বামীর মাঝে পরকীয়া জনিত কোন সন্দেহজনক আচরণ দেখিনি। রিপনের স্ত্রী বিশ্বাস করেন তার স্বামী কোনভাবেই পরকীয়াতে জড়িত থাকতে পারেন না। এ ঘটনায় আরও লোক জড়িত আছে উল্লেখ করে তিনি জানান, সন্ধ্যার পরেই ২ জন মিলে একজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলবে এটা অসম্ভব। এ পরিকল্পিত হত্যায় আরও লোক জড়িত রয়েছে। ঘটনাস্থল হতে ফজলুল হকের শ্যালক শাহাদাতের গেঞ্জি উদ্ধার করা হলেও তাকে এই মামলায় আটক করা হয় নি। আগেরদিন বিকেলে আমার স্বামী এতোগুলো টাকা নিয়ে বের হয়েছে পরেরদিন সকালে তার লাশ পেলাম কিন্ত অদ্যাবধি টাকাগুলোর সন্ধান পাইনি। টাকার লোভেই তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে পরকীয়ার অপবাদ দিচ্ছে। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তারা শোকাহত ছিলেন বলে সে সময় এসব বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পান নি।

রিপনের মা রাবেয়া বেগম জানান, আমার ছেলে ভেকু কেনার জন্য গরু বিক্রয় করে টাকা যোগাড় করেছিলো, সে টাকার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় ফজলুর রহমান ও তার স্ত্রী আমেনাকে আটক করলেও ফজলুর ভাই হুমায়ূন কবীর টিপু, শ্যালক শাহাদাত, ফুফাতো ভাই ইলিয়াছ ও আদেল হোসেন মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।

রিপনের ১১ বছর বয়সী শিশু কন্যা মিতু জানান, ২ মাস হলো বাবাকে দেখি না। সেদিন বিকেলে ছোট বোনের জন্য খাবার আনবেন বলে বের হলেন আর আসলেন না। পরদিন সকালে দেখি মাঠের মাঝখানে কাদার মাঝে বাবার লাশ। মাদরাসায় বাবার খুনীর সন্তানদের সাথে ক্লাস করতে আমার খুব কষ্ট হয়।

রিপনের ভাই মোঃ আক্তার হোসেন ও বোন কোহিনুর বেগম জানান, রিপনের কাছে থাকা অর্থ আত্মসাতের পর খুনীরা পরকীয়ার গল্প সাজিয়েছে। রিপন এ ধরনের লোক না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খিলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আসাদুল ইসলাম জানান, পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফজলুর রহমান ও তার স্ত্রী আমেনাকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পরকীয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।এছাড়া এলাকায় তাদের পরকীয়ার ঘটনায় পূর্বে শালিস দরবার হয়েছে যা মামলা তদন্তকালীন সময়ে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

শাহরাস্তি মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুল মান্নান জানান, আটক আসামীদের স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বাঁশ, দড়ি ও অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ২ জন আদালতে তাদের দোষ স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। তদন্তের শেষ পর্যায়ে এ ধরনের বক্তব্য রহস্যজনক। ভিকটিমের পরিবারের কাউকে হুমকি-ধমকির বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই শুক্রবার উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের উত্তর গঙ্গারামপুর মাঠ থেকে ওই গ্রামের মৃতঃ মৌলভী মকছুদ আলীর পুত্র বেলায়েত হোসেন রিপনের (৩৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রিপন একজন কৃষক। সে মৌসুমে মাটি ও চামড়ার ব্যবসা করতো।

ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ এ হত্যাকান্ডে জড়িত ফজলুর রহমান ও তার স্ত্রী আমেনাকে আটক করতে সক্ষম হয়।

পারিবারিক ভাবে জানা যায়, নিহত রিপন বিবাহিত ছিল। তার ২কন্যা ও ১ পুত্র সন্তান রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়