শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২১, ২২:৫৬

ছয়মাস কর্মকালে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের দৃশ্যমান উন্নয়নে জনসন্তোষ

অনলাইন ডেস্ক

গত ৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে চাঁদপুর জেলার ২০তম জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি এ জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০তম হলেও নারী জেলা প্রশাসক এ জেলায় তিনিই প্রথম। ২২তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তার চাঁদপুর জেলায় তাঁর কর্মকালের আজ ছয়মাস পূর্ণ হলো। এই ছয়মাস তিনি চাঁদপুরে তথা চাঁদপুর শহরে দৃশ্যত বেশ কিছু কাজ করেছেন। যা তিনি প্রশংসার দাবি রাখেন। চাঁদপুরে তাঁর ছয়মাস কর্মকালে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন কাজের তথ্য জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে তুলে ধরা হয়। যা পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো :-

আজ থেকে ৬ মাস আগে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের দায়িত্বগ্রহণ করার পর থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ চাঁদপুরকে একটি সুন্দর, নয়নাভিরাম এবং পর্যটনবান্ধব শহরে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পদ্মা, মেঘনা এবং ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে জেগে ওঠা এই সমৃদ্ধ জনপদ যে সামান্য পরিচর্যা পেলেই পরিণত হতে পারে এক আকর্ষণীয় নগরীতে, সেই বিশ^াসকে সামনে রেখে জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও ত্বরান্বিত করতে বেশ কিছু স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তিনি।

ইতোমধ্যেই এসব পরিকল্পনার বেশ কয়েকটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।

১) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় : জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেহেতু জনসাধারণসহ জেলার সকল স্তরের জনপ্রতিনিধি, সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ আসেন, সেহেতু জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে সকলের জন্যে আরামদায়ক ও দৃষ্টিনন্দন করতে কার্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে বেশ কিছু রূপান্তর ও সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- কার্যালয়ের ভেতরের খোলা জায়গাটিকে সুদৃশ্য বাগানে পরিণত করা, কার্যালয়ের প্রবেশপথ হতে শুরু করে সকল করিডোরে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশবান্ধব ফুলের টব স্থাপন, নারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নারী-সেবাপ্রত্যাশীদের ব্যবহারের জন্য অজুুখানা এবং ওয়াশরুম সম্বলিত বিশ্রামাগার, কার্যালয়ের লাইব্রেরীতে নতুন বই সংযোজন এবং আরামদায়ক পড়ার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, জেলা প্রশাসনের ফ্রন্টডেস্ক/নাগরিক সেবা কেন্দ্রে দৃষ্টিগ্রাহী নোটিশবোর্ড স্থাপন, নতুনভাবে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক সেবা সনদ স্থাপন এবং কার্যালয়ের বাইরে সুদৃশ্য সাইনবোর্ড স্থাপন। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আগত সেবাপ্রার্থীদের জন্যে কার্যালয়ের বাইরের বাগান সংস্কার করে বসার বেঞ্চ এবং ওয়াকওয়ে তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

২) যেহেতু জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গসহ সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মিলনস্থান, তাই সম্মেলন কক্ষটিকে সংস্কার করে আরামদায়ক, দৃষ্টিনন্দন এবং আরো উন্নত করা হয়েছে।

৩) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের পার্কে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মৃতিফলকটিকে সংস্কার করে জনদৃষ্টিগ্রাহ্য করা হয়েছে। এছাড়া পার্কটিকে সুদৃশ্য করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

৪) বিজ্ঞ সরকারি আইনজীবীদের মানসম্মত অফিসকক্ষ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১০টি চেয়ার উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।

৫) ভেন্ডারদের বসার জন্য এর আগে কোনো স্থান ছিলো না। তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রোদে বৃষ্টিতে ভিজে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ভেন্ডারদের দুরবস্থা লাঘবের জন্যে তাদের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বাইরে ছাউনিসম্বলিত বসার স্থান তৈরি করে দেয়া হয়েছে।

৬) সার্কিট হাউজ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং কর্মকর্তাদের বিশ্রামস্থল। বাইরে থেকে আগত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ প্রথমেই সার্কিট হাউজের মধ্য দিয়ে জেলার সাথে পরিচিত হন। তাই সার্কিট হাউজকে মানসম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সার্কিট হাউজের বাগানকে সুদৃশ্য করে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। একইসাথে সার্কিট হাউজের সংস্কার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।

৭) জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা প্রশাসকের বাংলো সংলগ্ন পার্কটিকে সংস্কার করে সেখানে আবারো ফিরিয়ে এনেছেন বক এবং পানকৌড়ির দলকে। নয়নাভিরাম এই পার্কেই রয়েছে দেশের বিরল প্রজাতির নাগলিঙ্গম গাছ। মৃতপ্রায় গাছটিকে পরিচর্যার মাধ্যমে আবারো সুশোভিত করা হয়েছে। ৮) চাঁদপুর শহরে সীমিত বিনোদন পরিসর থাকায় ছোট ছোট শিশুরা বাইরের বিনোদন এবং খেলাধুলার স্থানের অভাবে প্রায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছিলো। তাদের মানসিক ও শারীরিক শিথিলতা কাটিয়ে তুলতে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতর গড়ে তোলেন ‘হৈ চৈ শিশু বিনোদন পার্ক’। পার্কটি সকল শিশুর জন্য উন্মুক্ত।

৯) স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরে গড়ে ওঠা পুকুরটিকে সংস্কার করে কোয়ার্টারের বাসিন্দাদের জন্য সেখানে মাছ চাষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১০) চাঁদপুর শিল্পকলা একাডেমীকে আরো দৃষ্টিনন্দন করে তোলার প্রয়াসে এবং শিল্পী ও দর্শকদের চাহিদা মাথায় রেখে শিল্পকলায় উন্নত চেয়ার ও টেবিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১১) চাঁদপুর শহরের একমাত্র প্রধান পর্যটনকেন্দ্র মোলহেড। তিন নদীর মিলনস্থলে জেগে থাকা নয়নাভিরাম এই স্থানে চাঁদপুর জেলার অধিবাসীসহ অন্যান্য জেলার ভ্রমণপিপাসু মানুষজনও এখানে সময় কাটাতে আসেন। স্থানটিকে পর্যটকদের নিকট আরো আকর্ষণীয় করতে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ‘বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্র’ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সেখানে প্রবেশ মুখে ‘বঙ্গবন্ধু পর্যটন কেন্দ্র’ নামে সুদৃশ্য একটি গেট নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রটিতে ভ্রমণপিপাসুদের বসার জন্যে নদীর পাড়ে বসার বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে একটি পার্ক। তাছাড়া স্থানটিকে আরো পর্যটকবান্ধব করতে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পরিকল্পনা। এ উদ্যোগটিকে সফল করতে সর্বতোভাবে পৃষ্ঠপোষকতা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন মাননীয় মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি মহোদয়। তাছাড়া সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মহোদয়সহ জনপ্রতিনিধিগণ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।

চাঁদপুর জেলাকে একটি আদর্শ, পর্যটকবান্ধব এবং আকর্ষণীয় জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে জেলার সকলের সহযোগিতা আহ্বান করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়