প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:১৯
হাজীগঞ্জে ৩ দিনে পানিতে ডুবে ৫ জনের মৃত্যু
অভিভাবকদের অসচেতনতাই দায়ী
![হাজীগঞ্জে ৩ দিনে পানিতে ডুবে ৫ জনের মৃত্যু](/assets/news_photos/2021/09/12/image-5559-1631417032bdjournal.jpg)
|আরো খবর
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বুধবার সকালে নিজ বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায় উপজেলার কালচোঁ দক্ষিন ইউনিয়নের ওড়পুর ভূইয়া বাড়ির জয়নাল আবেদিনের মেয়ে আসমা আক্তার (১৫)। আসমা স্থানীয় রামপুর আল বান্না স্কুলের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী। বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা জানিয়েছে আসমা মৃগী রোগী ছিলো।
একইদিন সকালে পৌরসভাধীন ১২নং ওয়ার্ড রান্ধুনীমুড়া গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির মনোয়ার হোসেনের ছোট মেয়ে খাদিজা আক্তার (৩) পানিতে ডুবে মারা যায়। খাদিজা বাড়ির উঠানে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পুকুরে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজন। সেখান থেকে খাদিজাকে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার দ্বাদশগ্রাম ইউনিয়নের কাপাইকাপ মিজি বাড়িতে মাইশা াআক্তার (২) পানিতে ডুবে মারা যায়। মাইশা ঘটনার দুই দিন আগে মায়ের সাথে মতলব বাবার বাড়ি থেকে বেড়াতে নানার বাড়ি আসে। ঘটনার দিন মাইশা খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে বাড়ির পুকুরে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজন। সেখান থেকে খাদিজাকে তুলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে।
একইদিন বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের মোল্লাডহর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ীর মৃত আনোয়ার মিয়ার স্ত্রী শিরিন বেগম (৫০) পুকুরে ডুবে মারা যায়। শিরিন বেগম মৃগী রোগী ছিলো বলে নিহতের পরিবার নিশ্চিত করেছে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রায়চোঁ বেপারী বাড়িতে জসিম উদ্দিনের ছেলে জাবেদ হোসেন (২) পানিতে ডুবে মারা যায়। শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিশুটি বাড়ির উঠানে খেলার সময় পরিবারের অগোচরে বাড়ির পুকুরে পানিতে ডুবে যায়। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায় তাকে পানিতে ভাসতে দেখেন বাড়ির লোকজন। এ সময় দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিশুগুলোকে পানি থেকে উঠিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান,পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুগুলো হাসপাতালে আনা হয় মৃত অবস্থায়।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আহমেদ তানভির হাসান বলেন, পানি থেকে তুলে আনা যে কয়টি শিশু হাসপাতালে আনা হয়েছে তার সবগুলোই আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এস এম শোয়েব আহমেদ চিত্শী বলেন, আমি কাউকে দায়ী করছি না তবে বিশেষ করে মায়েরা ঘরের কাজের থেকে বাচ্ছাদের দেখাশুনায় বেশি সচেতন হলে বাচ্ছারা পানিতে পড়ার সুযোগ পায়না। ঘরের পুরুষরা বাড়ির বাইরে থাকলে মায়েরা আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ বলেন, কোন অভিযোগ না থাকায় এবং লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া আমরা শিশুর মরদেহ নিহত শিশুদেরপরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি। অপর এক প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, মৃগী রোগী হউক আর শিশু হউক,পানিতে ডুবে মারার জন্য মূলত দায়ী অভিভাবকরা। পনিবারের অভিভাবকরা বিশেষ করে যারা শিশুদের দেখভালের দায়িত্বে থাকেন তারা একটু সচেতন হলে শিশুগুলো এভাবে পানিতে ডুবে মরেনা।