প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২১, ২১:২৫
আমরা বছরে একবারই গোশত খাই
ঈদের দিন বিকেল ৪টা। এ সময় কেউ বাড়ি বসে গোশত খায়, কেউ গোশত কুড়িয়ে বাড়ি ফিরে যায়। সাম্যের ঈদে কী নিদারুণ বৈষম্য। কারো সন্তানের জন্যে ঈদের বিকেলটা কত টাকা ঈদ সালামী পেলো সে হিসেব মিলাবার, আবার কারো সন্তান দিন শেষে কত টুকরো মাংস পেলো সে হিসেব দেখাবার।
|আরো খবর
প্রতি ঈদের চিরাচরিত এ দৃশ্য আরো একবার ধরা পড়লো চাঁদপুর কণ্ঠের ক্যামেরায়। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে ঈদের দিন বিকেলে কোরবানীর মাংসের ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে তেমনি একদল নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের।
ঈদের দিনেও পুরানো জামা-কাপড়ের সিরিয়ালে অপেক্ষাকৃত যেটি নতুন সেটি পরেই বেরিয়েছে ঈদ উদযাপনে। দরিদ্রের জীর্ণ-শীর্ণ পোশাক পরা মানুষগুলোর ঈদ উদযাপন মানেই বাড়ি বাড়ি গোশত কুড়িয়ে দিন শেষে বহুদিন পর ভালো তরকারি দিয়ে ভাত খাবার আত্মতৃপ্তি।
গোশত সংগ্রাহক দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য কহিনুর বেগম। কথা বলা হয় তার সাথে। 'ঈদ কেমন কাটলো?' প্রশ্ন করতেই কালো বোরখার আড়াল থেকে পাল্টা প্রশ্ন, গরিবের আবার ঈদ আছেনি? জি-পুতে কান্দে গোশত খাইতো। হেল্লাই ব্যাগ লই বাইর হইছি। আল্লায় ভালাই মিলাইছে।
'যতটুকু পেলেন ততটুকুতে চলবে?'- প্রতিউত্তরে কহিনুর বেগম হেসে বললেন, চইলতো না ক্যা? আমরাতো বছরে একবারই গোশত খাই। জি-পুত দুগার পেট ভরলেই খুশি। আমি আর হেতেনে (স্বামী) দুই এক টুকরা খাইলেই অইলো।
আরেকটি প্রশ্ন করার আগেই দেরি হয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়ে দ্রুত হাঁটা পায়ে তারা বাড়ির পথে এগিয়ে যায়। দু-এক কেজি মাংস পাওয়া কহিনুর বেগমদের চোখে মুখে যে খুশির দৃশ্য ফুটে উঠেছে, ফ্রিজে লাখ টাকার কোরবানির মাংস জমিয়ে রাখা বহু মানুষদের চেহারায় তার ছিটেফোঁটাও খুঁজে পাওয়া যায় না।