প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:২০
ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ না দেয়ায় রোগীর ভোগান্তি : ভুল স্বীকার না করে উল্টো ক্রেতাকে হেনস্তা

একজন রোগী সম্প্রতি নির্দিষ্ট একটি রোগের জন্যে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং চিকিৎসক তাকে নির্দিষ্ট ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। রোগী এই ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ সংগ্রহের জন্যে নিকটস্থ একটি ফার্মেসিতে যান। তবে ফার্মেসির কর্মচারীরা চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী নির্দিষ্ট ঔষধ প্রদান না করে বিকল্প ঔষধ দেন।
ফলে রোগী সেই ঔষধ গ্রহণ করার পরেও আরোগ্য লাভ করেননি এবং পুনরায় চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায় ফার্মেসি ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ দেয়নি। এর ফলে রোগীর শারীরিক কষ্ট ও মানসিক ভোগান্তি উভয়ই বেড়ে যায়।
রোগী হচ্ছেন মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. আব্দুস সালাম। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফার্মেসী চাঁদপুর শহরের টাউন হল মার্কেটের মম ফার্মেসির স্টাফদের সাথে কথা বললে তারা নিজেদের ভুল স্বীকার না করে উল্টো রোগীকে হেনস্তা করে। ওই দোকানদারের পাল্টা অভিযোগ, ভুল আমার একা হয়নি, তারও হয়েছে। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দোকানদার ভুল ঔষধের টাকা ফেরত দিলেও ভুক্তভোগী তা নেননি। ভুক্তভোগীর দাবি, আমি হাইমচর থেকে এসেছি। ঔষধ দেয়ার সময় বলেছি ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ দিতে। তারা সেটা না দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। আমি তার ক্ষতিপূরণ চাই।
এদিকে তাদের বাগবিতণ্ডা দেখে কয়েকজন পথিক বলেছেন এটি একটি গুরুতর বিষয়। কারণ, ঔষধ ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী না দিলে রোগ নিরাময়ে ব্যাঘাত ঘটে এবং রোগীর স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে পারে। এ ধরনের অবহেলা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যেমন : ফার্মেসিগুলোর ওপর নিয়মিত তদারকি, ফার্মাসিস্টদের প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বক্তব্য হলো : ঔষধ ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী না দিয়ে ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একজন রোগী যখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত ঔষধ গ্রহণ করেন, তখন তার প্রত্যাশা থাকে সঠিক ঔষধ পাবেন এবং তা রোগ নিরাময়ে সহায়ক হবে। কিন্তু কোনো ফার্মেসি যদি সেই চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র অমান্য করে ভুল বা বিকল্প ঔষধ প্রদান করে, তবে তা শুধু ভোক্তার স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর নয়, বরং এটি ভোক্তার অধিকার লঙ্ঘনেরও শামিল।
এ ধরনের ঘটনা প্রমাণিত হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী দায়ী ফার্মেসির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা সকল ফার্মেসিকে সতর্ক করছি, তারা যেন পেশাদারিত্বের সঙ্গে ব্যবস্থাপত্র অনুসরণ করে ঔষধ প্রদান করে এবং কোনোরূপ অনিয়ম থেকে বিরত থাকে।
ভোক্তাদের প্রতি অনুরোধ, তারা যেনো ফার্মেসি থেকে ঔষধ গ্রহণ করার সময় ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সঠিক ঔষধ পেয়েছেন কি না তা যাচাই করেন এবং কোনো অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জানান।