প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ২০:৪০
ভূয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অমর শীলের ২ বছরের কারাদন্ড
হাজীগঞ্জের ৫ নং সদর ইউনিয়নের ওলিপুর শীল বাড়ির মৃত গীরিন্দ্র শীলের ছেলে আটর্সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ অমর শীল (৩৪) নাম পাল্টে হয়ে যান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা : মো: এনামুল হক। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে তিনি নিয়মিত চর্ম যৌন রোগের সহকারী প্রফেসর তথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে ৭শ টাকা ভিজিটে গত প্রায় ৪ বছর ধরে চিকিৎসা দিচ্ছেন । হঠাৎ করে গত সোমবার (১৯ আগষ্ট) হাটে হাড়ি ভাঙ্গেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বেগমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত। তিনি অমর শীলকে দুই বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে ভুয়া চিকিৎসার কারণে রোগীদের জীবন ও নিরাপত্তা বিপন্ন করার অপরাধে অমর শীলের চেম্বার মা ও শিশু হসপিটাল কর্তৃপকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। এ দিকে অমর শীলের কারাদন্ডের বিষয়টি তার বাড়ির লোকজন জেনেছে বলে চাঁদপুর কন্ঠকে নিশ্চিত করেছন ওলিপুর এলাকার ইউপি সদস্য সোহরার হোসেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, চৌমুহনী পৌরসভার পাবলিক হল এলাকার জেনারেল মা ও শিশু হসপিটালে গত ১৯ আগষ্ট বিকেলে অভিযান চালান ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় হসপিটালের নিচতলায় অমর শীল তথা ডা মো এনামূল হকের চেম্বারে ‘সহকারী অধ্যাপক (বিএসএমএমইউ), এমবিবিএস, এফসিপিএস, ডিডিভি স্পেশাল ট্রেনিং ইন ডার্মাটোলজি (থাইল্যান্ড)’-এর ডিগ্রিধারী পরিচয়ে রোগী দেখছিলেন।
জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল হক জানান, তার প্রকৃত নাম অমর চন্দ্র শীল। ২০০৩ সালে তিনি হাজীগঞ্জের বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কারিগরি কলেজ থেকে এসএসসি ও ২০০৫ সালে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এর বেশি পড়াশোনা করেননি।
জেনারেল মা ও শিশু হসপিটালে তিনি গত চার মাস ধরে চেম্বার করছেন। প্রতিদিন ৩০-৩৫ জন রোগী দেখতেন এবং ৭০০ টাকা করে ভিজিট নিতেন।
এর আগে তিনি মাইজদীর ট্রাস্ট ওয়ান হসপিটালে চেম্বার করতেন। দুই হসপিটালে গত চার বছর ধরে বহু রোগী দেখেছেন অমর চন্দ্র শীল। পরে জেনারেল ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপ এনামুল নামধারী ওই চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তিপত্র ও সার্টিফিকেট ডিগ্রির সনদপত্র দেখাতে পারেনি। তথ্য-প্রমাণ ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে অমর শীলকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে পুলিশে সোপর্দ এবং হসপিটাল কর্তৃপকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘চার বছর ধরে বহু রোগী দেখেছেন ওই ভুয়া চিকিৎসক অমর চন্দ্র শীল। তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’