রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০

দুর্গা পূজার প্রচলন
অনলাইন ডেস্ক

দুর্গাপূজা কবে, কখন, কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিলো তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। ভারতের দ্রাবিড় সভ্যতায় মাতৃতান্ত্রিক দ্রাবিড় জাতির মধ্যে মাতৃদেবীর পূজার প্রচলন ছিলো। আর্য সভ্যতায় প্রাধান্য ছিলো দেবতাদের। অনার্য সভ্যতায় প্রাধান্য ছিলো দেবীদের। ভারতে মাতৃরূপে দেবী সংস্কৃতির ধারণা অতি প্রাচীন। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ২২ হাজার বছর আগে ভারতে প্যালিওলিথিক জনগোষ্ঠী থেকে দেবী পূজার প্রচলন শুরু হয়েছিলো। হরপ্পা ও মহেঞ্জদারো সভ্যতা তথা সিন্ধু সভ্যতায় এসে তা আরও গ্রহণযোগ্য, আধুনিক ও বিস্তৃত রূপ লাভ করে। বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া এবং অন্যান্য জেলায়ও ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই উৎসব পালন করা হয়। বিদেশে যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, ফিজি, টোবাকো, কুয়েত, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হিন্দুরা বা বাঙালি হিন্দুদের নানা সংগঠন এই উৎসব পালন করে থাকে। বাংলা ভূখণ্ডে এই পূজাকে শারদীয় পূজা, শারদোৎসব এবং বসন্তকালে বাসন্তীপূজা বলা হয়। তবে বিহার, আসাম, উড়িষ্যা, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, কেরালা, হিমাচল প্রদেশ, মহীশুর, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশে এ পূজাকে নবরাত্রি পূজা বলা হয়। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, দুর্গাপূজার প্রথম প্রবর্তক কৃষ্ণ, দ্বিতীয়বার দুর্গাপূজা করেন স্বয়ং ব্রহ্মা, আর তৃতীয়বার দুর্গাপূজার আয়োজন করেন মহাদেব। আবার দেবী ভাগবত পুরান থেকে জানা যায়, ব্রহ্মার মানসপুত্র মনু ক্ষীরোধ সাগরের তীরে দুর্গার আরাধনা করে বর লাভে সফল হন। যদিও মূল বাল্মীকির রামায়ণে, দুর্গাপূজার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। কিন্তু কৃত্তিবাসী রামায়ণে দুর্গাপূজার অস্তিত্ব আছে। সনাতন ধর্মের আর্য ঋষিরা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রতীক হিসাবে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ লাভের জন্যে আরাধনা করতেন। মার্কা-েয় পুরান মতে, চেদী রাজবংশের রাজা সুরাথা ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কলিঙ্গে (বর্তমানে ওড়িষ্যা) দুর্গাপূজার প্রচলন করেছিলেন। মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে দুর্গাপূজার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে দিনাজপুরের জমিদার প্রথম দুর্গাপূজা করেন। আবার কারও মতে, ষোড়শ শতকে রাজশাহী তাহেরপুর এলাকার রাজা কংসনারায়ণ প্রথম দুর্গাপূজা করেন। ১৫১০ সালে কুচ বংশের রাজা বিশ্ব সিংহ কুচবিহারে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। অনেকে মনে করেন, ১৬০৬ সালে নদীয়ার ভবনানন্দ মজুমদার দুর্গা পূজার প্রবর্তন করেন। আবার কেউ বলেন, ১৬১০ সালে কলকাতার সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার দুর্গার ছেলে-মেয়েসহ সপরিবারে পূজা চালু করেন। ১৭১১ সালে অহম রাজ্যের রাজধানী রংপুরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের দুত রামেশ্বর নয়ালঙ্কার। পলাশীর যুদ্ধে বিজয় লাভের জন্য ১৭৫৭ সালে কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়িতে রাজা নবকৃঞ্চদেব লর্ড ক্লাইভের সম্মানে দুর্গাপূজার মাধ্যমে বিজয় উৎসবের আয়োজন করেছিলেন। পাটনাতে ১৮০৯ সালের দুর্গাপূজার ওয়াটার কালার ছবির ডকুমেন্ট পাওয়া যায়। উড়িষ্যার রামেশ্বরপুরে একই স্থানে ৪০০ বছর ধরে সম্রাট আকবরের আমল থেকে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। কাসিমবাজারের রাজা হরিনাথ ১৮৩২ সালে বারোয়ারি এই পূজা কলকাতায় পরিচিত করান। পরে তাদের দেখাদেখি আস্তে আস্তে তা উচ্চবর্ণের হিন্দু বাঙালি জমিদারদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সম্ভবত সেই থেকে ব্রিটিশ বাংলায় এই পূজা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। বর্তমান সময়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নিবিশেষে সকলের উপস্থিতিতে দূর্গাপূজা সার্বজনীন উৎসবের রূপ নেয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়