প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
শোকের মাস যেন একটি কালো গোলাপ। এই মাসকে নিয়েই সৌরভ এবং রঙের সঙ্গে এক হয় গৌরব ও বেদনার ধারণা। গৌরব স্বাধীনতার মতো বড় অর্জন। আর শোক স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখানো মানুষ পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নিহত হওয়া। জীবন-মৃত্যুর দুই গভীর জায়গায় তিনি আমাদের সামনে দাঁড়ানো অবিনাশী মানুষ। মৃত্যুর অবধারিত সত্য মেনে নিয়ে তিনি আমাদের সামনে অমরত্বের সাধনা।
এ দু’টো সত্যকে এক করে আগস্ট মাস প্রবলভাবে অর্থবহ। তিনি ছিলেন বলে আমরা স্বাধীনতার মতো বড় অর্জন পেয়েছি। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশে^র দরবারে নিজ অবস্থান তৈরি করেছে। তাঁকে সামনে রেখে চলছে পথচলা। খুঁজে নেয়া হচ্ছে দিক-নির্দেশনা। তিনি আছেন। সহায়ক শক্তি হিসেবে গণমানুষের চেতনায় প্রদীপ্ত আলো। গণমানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় জাগরণের গান।
ছড়িয়ে আছে তাঁর আদর্শ ও স্বপ্ন। দুঃখী মানুষের জীবন বদলানোর জন্য তাঁর অন্তহীন প্রেরণা, আজকের বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জাতির জন্য শোক কোনো শেষ কথা নয়। শোক যে শক্তির উৎস হয়, বাংলাদেশ তার প্রমাণ। এ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। প্রত্যাশা করা যায় নিকট ভবিষ্যতে বাকি রায়ও কার্যকর হবে। তাঁর মৃত্যুর পরে এ দেশে মৌলবাদীদের উত্থান ঘটে। তারা চেয়েছিল দেশটিকে মধ্যযুগীয় অন্ধকারে ঠেলে দিতে।
কিন্তু সেটা হয়নি। শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে দেশের মানুষ। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ মানবিক চেতনার ঠিকানা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আজকের বাংলাদেশ মানুষের প্রকৃত আবাসস্থল হোক এটাই সবার প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশার জয়গানে মুখরিত আজ শোকের মাস। তাঁর বক্তৃতার বাণী নিজেদের কণ্ঠে তুলে বলতে হবে, ‘বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান, বাংলাদেশে যারা বসবাস করেন, তাঁরা সকলেই এ দেশের নাগরিক। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরা সমঅধিকার ভোগ করবেন।’