গ্রাম পুলিশের অভিযোগের মাস না পেরুতেই এবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন ইউপি সদস্য। ঘটনাটি হাজীগঞ্জের ৬নং বড়কুল ইউনিয়নের। গ্রাম পুলিশের অভিযোগটি থানায় আর ইউপি সদস্যের অভিযোগটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। তবে এতোসব অভিযোগকে অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কবির হোসেন মিয়াজী জানান, করোনাকালীন ট্যাক্স আদায় বন্ধ থাকায় সদস্যদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট উক্ত ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) আব্দুল হাই তার নিজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কবির হোসেন মিয়াজীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে আব্দুল হাই গত ৩০ মাস যাবৎ সম্মানী ভাতা না পাওয়ায় অভিযোগে উল্লেখ করেন। এর আগে একই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে এনে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশের সদস্য স্বপন সাহা।

ইউপি সদস্য আঃ হাই অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি বর্তমান পরিষদের একজন নির্বাচিত সদস্য। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চেয়ারম্যান মাসিক সম্মানী ভাতা উত্তোলন করলেও গত ৩০ মাস যাবৎ তার সম্মানী দিচ্ছেন না। তিনি সম্মানীর টাকার কথা বললে চেয়ারম্যান বিভিন্ন রকম টালবাহানা করেন।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, তারা নিরীহ ইউপি সদস্য। করোনাকালীন এই পরিস্থিতিতে ধার-দেনা করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। যার ফলে জনহিতকর কাজ করতে পারছেন না এবং পাওনাদারের চাপে তারা দিশেহারা। এমতাবস্থায় মাসিক সম্মানী ভাতা না পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অসুবিধায় পড়বেন। তাই ইউএনওর মাধ্যমে নিরীহ ইউপি সদস্যদের বকেয়া সম্মানী ভাতা পাওয়ার আবেদন করেন।

ইউনিয়নের সচিব হালিমা আক্তারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, টেক্স আদায়ের টাকা থেকে সম্মানী ভাতা পরিশোধ করা হয়। বর্তমানে একাউন্টে কোনো টাকা না থাকায় চেয়ারম্যান সাহেব সম্মানী ভাতা দিতে পারছেন না। তাছাড়া ইউপি সদস্যদের অনুরোধেই করোনাকালীন এই সময়ে ট্যাক্স আদায় করাচ্ছেন না চেয়ারম্যান।

ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কবির হোসেন মিয়াজী মুঠোফোনে বলেন, করোনাকালীন সময়ে রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে ইউপি সদস্যদের সম্মানী ভাতা বকেয়া পড়েছে।

ইউপি সদস্য থেকে অভিযোগ পেয়েছেন নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। রাজস্ব আয় থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সম্মানী ভাতা দেয়া হয়। এখন যদি পরিষদে টাকা থেকেও সম্মানী ভাতা না দেয়া হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ আগস্ট গ্রাম পুলিশ সদস্য স্বপন সাহা তাকে মারধর ও গালমন্দের অভিযোগে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব কবির হোসেন মিয়াজীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন এবং এ দিন তিনি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।