সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৩, ০০:০০

রাস্তি শাহ থেকে শাহরাস্তি
ফয়েজ আহমেদ

ভারতীয় উপমহাদেশে যাঁদের হাত ধরে ইসলাম ধর্ম বিস্তৃতি লাভ করেছিলো সাধক হযরত রাস্তি শাহ (রঃ) তাঁদের মধ্যে অন্যতম। যাঁর নামানুসারে শাহরাস্তি উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ১২৩৮ সালে ইরাকের বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী ও রাজ্জাক আলী গিলানীর আত্মীয় ছিলেন তিনি।

১৩৫১ সালে দিল্লীর সুলতান ফিরোজ শাহ এবং বাংলার সুবেদার ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমলে হযরত শাহজালাল যে ৩৬০জন ইসলাম ধর্ম প্রচারককে সঙ্গে নিয়ে এদেশে আসেন রাস্তি শাহ্ তাঁদের অন্যতম। ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি ৭৩৮ বঙ্গাব্দে প্রথম ইয়েমেন আসেন, সেখান থেকে পরবর্তীতে এদেশে আসেন। ইয়েমেন হতে এদেশে আসেন বলে অনেকে তাকে ইয়েমেন বংশোদ্ভূত বলেও মনে করেন। এদেশে আসার সময় তাঁর অন্যতম সহচর ছিলেন তাঁর ছোট ভাই শাহ মাহবুব।

লোককথায় আছে, হযরত শাহরাস্তি (রঃ) যে সাধক দল নিয়ে ভারতে আগমন করেন তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই ছিল একমুঠো করে মাটি। তাঁদের সেখানেই স্থায়ী হতে হয়েছিল, যেখানকার মাটির রং তাঁদের হাতে থাকা মাটির সাথে হুবহু মিলে গিয়েছেল। ভারতে আগমনের পর রাস্তি শাহের হাতের মাটির রং কুমিল্লার মাটির রঙের সাথে মিলে যায় এবং তিনি কুমিল্লায় একটি পাহাড়ের ওপর অবস্থান গ্রহণ করেন। তবে এই স্থানটি সঠিক ছিল না। পরবর্তীতে যে স্থানের সাথে হযরত শাহরাস্তির কাছে থাকা মাটির রং হুবহু মিলে যায়, সেখানে তাঁর কাছে একটি বাঘ এসেছিল এবং তিনি সেখানেই স্থায়ী হন। যা বর্তমান শাহরাস্তি এলাকা।

হযরত রাস্তি শাহ (রঃ)-এর নামানুসারেই ১৯৮৭ সালের ১৩ মার্চ ‘শাহরাস্তি’ উপজেলা গঠিত হয়। তিনি ১৩৮৮ সালে ইন্তেকাল করেন। শাহরাস্তি উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে তাঁর মাজার অবস্থিত। মাজারের কাছে পূর্বে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট প্রাচীন একটি মসজিদ ছিলো, যা বর্তমানে ভেঙ্গে আধুনিক ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। জনশ্রুতি আছে, হযরত রাস্তি শাহ (রঃ)-এর মৃত্যুর সাড়ে তিন বছর পর সুবেদার শায়েস্তা খানের মেয়ে পরী বিবির আদেশে কাজী গোলাম রসূল এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। তাঁর মাজার রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বার্ষিক দুশ’ দশ টাকা হারে অনুদান দিতো। মাজারের উত্তর দিকে ৩০ একর জমির উপর বিশাল একটি দিঘি রয়েছে। প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মাজারে বার্ষিক ওরশ অনুষ্ঠিত হয়। এ ওরশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ হযরত রাস্তি শাহ (রঃ)-এর মাজার জেয়ারতে উপস্থিত হন।

হযরত শাহরাস্তি (রঃ) অবিবাহিত ছিলেন। এখানে আসার পর ইসলাম প্রচারের জন্যে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেন। তাঁর অনুপ্রেরণা ও চারিত্রিক মাধুর্যগুণে অসংখ্য মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত এবং তাঁর হাত ধরেই এ অঞ্চলে ইসলামের গোড়াপত্তন হয়। তাঁর ভাই সৈয়দ শাহ মাহবুব এবং আরো দুজন সঙ্গী তাঁর সাথে ছিলেন। তাঁদের উত্তরাধিকারীরা এখনও তাঁর মাজারের পাশে বসবাস করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়