প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ০০:০০
হাঁটি হাঁটি পা পা করে পথচলার ৩০ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ। প্রথমে সাপ্তাহিক, পরে দৈনিকে রূপান্তরিত হওয়া। পত্রিকাটি চাঁদপুর জেলার আনাচে কানাচে সর্বত্র পৌঁছে গেছে। পত্রিকাটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জেলার প্রথম ও সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। চাঁদপুর কণ্ঠের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকল পাঠককে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
চাঁদপুর কণ্ঠ প্রথমে সাপ্তাহিক থাকাবস্থায় হকার্স মার্কেটে অফিস ছিলো। আমি চাঁদপুরে লেখাপড়ার সুবাদে সেখানে আমার যাতায়াত ছিলো। পত্রিকাটি দৈনিকে রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত পাঠক ছিলাম। লেখাপড়ার পাশাপাশি জেলার অন্য একটি পত্রিকায় আমার সাংবাদিকতা শুরু হয়। যদিও অন্য পত্রিকায় কর্মরত ছিলাম, কিন্তু চাঁদপুর কণ্ঠের নিয়মিত পাঠক ছিলাম। সেই থেকে চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করার মনমানসিকতা তৈরি হয়। ২০০৩ সালে প্রথমে চাঁদপুর কণ্ঠে হাজীগঞ্জের রাজারগাঁও সংবাদদাতা হিসেবে যোগদান করি। পরবর্তীতে হাজীগঞ্জের উত্তরাঞ্চল ও বর্তমানে হাজীগঞ্জ উপজেলার নিজস্ব প্রতিনিধি হিসেবে কণ্ঠ পরিবারের সাথে আছি।
দীর্ঘদিন ধরে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, নির্ভুল বানানসহ একটি পরিপাটি পরিচ্ছন্ন সংবাদপত্র হিসেবে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ অবিরামভাবে যারা পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার জন্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন।
আমার দেখায় সুদক্ষ এবং আপসহীন সম্পাদনায় যৌবনকাল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে পত্রিকাটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে এবং জনপ্রিয় করতে যিনি মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন, তিনি হচ্ছেন জেলার অনেক সাংবাদিকের গুরু, পত্রিকার প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত। তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা, সালাম ও শুভেচ্ছা।
চাঁদপুর সদর থেকে আমার বাড়ি প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করার শুরুর দিকে আমি এলাকার ও উপজেলার টুকিটাকি খবর নিয়ে রাজারগাঁও থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে যেতাম। তৎসময় সামান্য যানবাহন ছিল। সময়মত যানবাহন না পেলে পায়ে হেঁটে মহামায়া বাজার পর্যন্ত গিয়ে বাসে করে চাঁদপুর যেতাম। সে সময় যাতায়াত যে কত বিড়ম্বনার ছিল তা আজ বলে বুঝানো যাবে না। একে তো ভাড়া, অন্যদিকে সময় নষ্ট। নাস্তা খরচসহ সাথে অন্যান্য খরচের মোটা অংকের টাকা খরচ হওয়ার পরেও কেন জানি এক অন্যরকম আকর্ষণ ছিল চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করার। মাঝখানে ২০১১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই চলে গেলেও সাড়ে চার মাস পর দেশে চলে আসি এবং আবার চাঁদপুর কণ্ঠের কাজে যোগ দেই। চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করার সুবাদে অনেক শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য পেশার লোকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। একদিকে সাংবাদিক অন্যদিকে সংবাদ আর সংবাদপত্র সব মিলিয়ে সে এক অন্যরকম অনুভূতি। সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা আর কণ্ঠ পরিবারের অনুপ্রেরণায় সংবাদপত্রে সম্মানজনক অবস্থানকে কেন্দ্র করে একটি মফস্বল এলাকায় থেকেও কণ্ঠ পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন থাকতে সক্ষম হয়েছি।
চাঁদপুর কণ্ঠে কাজ করে আমার অর্জন : হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পর পর দুবার ক্রীড়া ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক এবং বর্তমান কার্যকরী সদস্য হওয়া, হাজীগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে কার্যকরী সদস্য হওয়া, হাজীগঞ্জ সাহিত্য পরিষদের সাবেক সদস্য সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সদস্য হতে সক্ষম হওয়া।
চাঁদপুর কণ্ঠ পত্রিকাটি সুনামের সাথে পাঠকের হাতে যাচ্ছে প্রতিদিন। চাঁদপুরে অনেক দৈনিক পত্রিকা। অতি দ্রুত সময়ে ডিক্লারেশন লাভে সমর্থ হয়ে এবং অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন অফিস খুলে এক রকম প্রতিযোগিতা দিয়েও চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে পেরে উঠে নি। তার একমাত্র কারণ, কণ্ঠ পরিবারে আছে বহু সাংবাদিক তৈরির দক্ষ কারিগর কাজী শাহাদাত ও বিভিন্ন উপজেলায় কণ্ঠ পরিবারের সৃজনশীল দক্ষ প্রতিনিধিবৃন্দ।
শেষ প্রত্যাশা : শত বছর উদযাপন হোক চাঁদপুর কণ্ঠের। সেই সাথে পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক, প্রধান সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন উপজেলা প্রতিনিধি সহ সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।