প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুর কণ্ঠ ১৯৯৪ সালের ১৭ জুন যাত্রা শুরুর পর থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ১৭ জুন ২০২৩ তারিখে ত্রিশ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। এই শুভলগ্নে পত্রিকার পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। কোনো এক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম, চাঁদপুর কণ্ঠ রক্তের সাথে মিশে গেছে। আসলেই মাঝে কিছু কিছু বিষয় সামনে এলে তা অনুভব করি।
সম্প্রতি চাঁদপুর রোটারী ক্লাবে চাঁদপুর রোটারী ক্লাব ও ফরিদগঞ্জ রোটারী ক্লাবের যৌথ অ্যাসেম্বলিতে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটাঃ কাজী শাহাদাতকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে ক্লাবের সাবেক সভাপতি রোটাঃ তমাল ঘোষ বলেন, কাজী শাহাদাত চাঁদপুর কণ্ঠ ও চাঁদপুরকে ভালোবেসে চাঁদপুর ছেড়ে যাননি। তা না হলে তিনি যে মাপের সাংবাদিক এবং তাঁর যে অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাতে ঢাকায় থাকলে হয়তোবা ঢাকার কোনো বড় জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দেখলেও দেখতে পারতাম।
সত্যি কথাই বলেছেন রোটাঃ তমাল ঘোষ। চাঁদপুর কণ্ঠ ও কাজী শাহাদাত এমনই। বস্তুনিষ্ঠতা, সঠিক তথ্য, নির্ভুল বানান এবং চাঁদপুর কণ্ঠের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংবাদকর্মীদের সঠিক সংবাদ প্রদানের মাধ্যমে জেলাবাসীর প্রিয় মুখপত্র এবং নির্ভরশীল দৈনিক পত্রিকায় পরিণত হয়েছে। তবে করোনা পরবর্তী সময় এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা, পত্রিকার কাঁচামালের উচ্চমূল্য চাঁদপুর কণ্ঠের এই যাত্রাকে মাঝে মধ্যে থমকে দিতে চায়। যদিও শেষ পর্যন্ত পাঠকের ভালোবাসার কারণে এখন পর্যন্ত টিকে রয়েছে চাঁদপুর কণ্ঠ।
বিশেষ করে বলতে হয়, বিজ্ঞাপন বাজারে ধস নামায় একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। একসময়ের নিয়মিত বিজ্ঞাপনদাতাও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে প্রচারের বড় হাতিয়ার ভেবে পত্রিকাগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আজকের এই পর্যায়ে এসে শুভানুধ্যায়ীদের বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে।
এখনো যখন কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে, ভুক্তভোগীরা প্রথমেই পত্রিকার সংবাদকর্মীদের খোঁজ করে তাদের বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশের মাধ্যমে প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষের নজরে নিয়ে আসার জন্যে। যদিও প্রতিষ্ঠিত অনলাইন মিডিয়াগুলোর বাইরে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা হাজার হাজার অনলাইন মিডিয়াগুলোর কারণে অনেক স্থানে সংবাদকর্মীদের নানা অপপ্রচার বা হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে।
তবে সুদিন অবশ্যই আসবে। ভুয়া ও চটকদার সংবাদ শিরোনাম দিয়ে অন্তঃসারশূন্য অনলাইন ও পত্রিকাগুলো থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে অবশ্যই মূলধারার পত্রিকা ও গণমাধ্যমের সাথে থাকবে।
আমি চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে কাজ শুরু করি ১৯৯৪ সালেই। এর দুই বছর আগে থেকে গণমাধ্যমে টুকটাক লিখলেও এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে অবসর সময়ে সেই সময়ের সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠের বকুলতলার বাসায় বার্তা সম্পাদক মির্জা জাকির ভাইয়ের হাতে আবেদন তুলে দিয়ে কণ্ঠ পরিবারের সদস্য হই। সেই যে শুরু আজ পর্যন্ত বিরামহীনভাবে পরিবারের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে রয়েছি। আমার সাথের অনেক সহকর্মী এখন জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আমি চাঁদপুর কণ্ঠকে ছেড়ে যেতে চাইনি, যাইও নি। ওই যে বলেছি রক্তের সাথে হয়তবা মিশে গেছে, তাই।
একদিন হয়তোবা ছেড়ে যেতেই হবে। তবে যতদিন চাঁদপুর কণ্ঠের সাথে থাকবো সর্বদা তার মঙ্গল কামনা করবো। একজন গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে সর্বদা চাঁদপুর কণ্ঠ বেঁেচ থাকুক হাজারো বছর--এই কামনা করছি।
প্রবীর চক্রবর্তী
ব্যুরো ইনচার্জ, ফরিদগঞ্জ
ও
সহ-সম্পাদক, চাঁদপুর কণ্ঠ অনলাইন বিভাগ