প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ০০:০০
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)-এর অধীনে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ ৬৩কোটি ৮৪ লাখ ৩৬ হাজার ৫শ’ ৪১ টাকার কাজ বাস্তবায়ন ও চলামান রয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কাজ চলমান এবং কিছু কাজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির অফিস সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বড় কাজ হলো ৫৬ কোটি এবং এপ্রোচ সড়কসহ মোট ১০৭ কোটি টাকা টাকা ব্যয়ে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ উটতলী সেতু।
উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সূত্র মতে, ২০১৯ সাল থেকে এলজিইডির বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন সড়ক নির্মাণ, পুরাতন সড়ক মেরামত, কালভার্ট নির্মাণ, ১শ’ মিটার সেতু, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যনের বাংলোসহ নানা প্রকল্প রয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছরে অন্তত ২৩টি সেতু নির্মাণের জন্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
সূত্র মতে, যেসব নির্মাণ কাজ সম্পন্ন ও চলমান রয়েছে, তার মধ্যে (GCP-3, IRIDP-3, CCB, RCIP) নতুন ৭৬ কিলোমিটার সড়ক। যার জন্যে ব্যয় হচ্ছে ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার ৪শ’ ৭৫ টাকা, মেইনটেনেন্সে তথা পুরাতন সড়ক মেরামতে (GOB-1, GCP-3, VRRP, FDDRIRP) এই পর্যন্ত ১৬২ কিলোমিটার সড়ক বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর জন্যে ব্যয় হচ্ছে ৮৯ কোটি ৪১ লাখ ১৬ হাজার ৩শ’ ৩৩টাকা, ১৪টি কালভার্ট (GOB MAINTENABCE) নির্মাণে ব্যয় ৩ কোটি ৬০ লাখ ১১হাজার ৬শ’ ২৪ টাকা। তুলাতুলি এলাকায় অনূর্ধ্ব ১শ’ মিটার সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ৩শ’ ৮৯ টাকা। উটতলী সেতুর মূল অংশের জন্য ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার ৮শ’ ৪ টাকা। ৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে (PEDP-4, NBIDGPS-1, NBIDNNGPS) ব্যয় ৪০ কোটি ৭৮ লাখ ৫৬হাজার ৬শ’ ৬৩ টাকা। ৫টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণে ব্যয় ৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৭ হাজার ৪শ’ ৫০ টাকা, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ও হল রুম নির্মাণে ব্যয় ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ৭শ’ ৫৯ টাকা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় ৪ কোটি ৭৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬শ’ ৬৩ টাকা। বিভিন্ন বাজারের মার্কেট (GCP-3) নির্মাণে ৫৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮শ’ ৫৫ টাকা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাংলো নির্মাণে ১ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার ৭শ’ ৫৯ টাকা, সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ৬৯ লাখ ১৫ হাজার ৬শ’ ২৩ টাকা, সার্বজনীন মসজিদ ও উন্নয়ন কাজে ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৭শ’ ২৬ টাকা এবং পুরাতন ব্রীজের মেরামত ও নির্মাণ বাবদ ১ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার ৪শ’ ৩০ টাকা ব্যয় হয়েছে।
পুরাতন সড়ক মেরামতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সড়কটি হলো ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়ক। জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশায় সড়কটি ইতিমধ্যেই মেরামত ও উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তুলাতুলি এলাকার অনূর্ধ্ব একশ’ মিটার ব্রীজটি যান চলাচলের জন্যে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় উপজেলার রামপুর বাজার সোলাখালী ব্রীজ পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক মেরামত ও উন্নয়নের জন্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে কালিরবাজার সড়কটিও মেরামত ও উন্নয়নের জন্যে প্রাক্কলন শেষ পর্যায়ে রয়েছে, দ্রুতই টেন্ডারে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে চলতি অর্থ বছরে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আনতে ২৩টি ব্রীজের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে উপজেলা সদরের কেরোয়া ও বিশকাটালি ব্রীজসহ ৭টি ব্রীজের ডিজাইন শেষ হয়েছে। এই ২৩টি ব্রীজের মধ্যে উল্লেখ করার মতো ব্রীজ হলো ডাকাতিয়া নদীর উপজেলা সদরের ডাকবাংলো সংলগ্ন খেয়াঘাটে এবং এ আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে আরেকটি। এই দুটি সেতু নির্মিত হলে উপজেলা শহরের যানজট নিরসন ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থায় নূতন প্রাণের সঞ্চার হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের নূতন দ্বার উন্মোচন হবে। খেয়াঘাট (এলাকায় আঞ্চলিক ভাবে গুদাড়াঘাট বলা হয়) সেতুটি নির্মিত হলে চাঁদপুর থেকে ফরিদগঞ্জ বাজারের উদ্দেশ্যে আসা লোকজনকে আর ঘুরতে হবে না। সহজেই বাজারে আসতে পারবে।
এদিকে ৫ বছরে উন্নয়ন কাজের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহম্মদ বলেন, নতুন সড়ক, পুরাতন সড়কে উন্নয়ন ছাড়া এই ৫ বছরে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অনেক কাজ শেষ হয়েছে। কিছু বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। কিছু প্রকল্পের কাজ অনুমোদনের জন্যে পাঠানো হয়েছে।