সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৩, ০০:০০

ঝড়-বৃষ্টিতে যে দোয়া পড়বেন
অনলাইন ডেস্ক

গ্রীষ্মের খাঁ খাঁ রোদ্দুরে জমিন ফেটে যখন চৌচির হয়ে যায়- তখন মেঘের গর্জন কৃষাণের মুখে হাসি ফোটায়। বৃষ্টির ফোঁটাগুলো স্বস্তি হয়ে ঝরতে থাকে। আর আল্লাহর অনুকম্পায় সিক্ত মাটির সোঁদা গন্ধে স্মিত হয়ে হারিয়ে যায় তাবদাহের অসহ্যতা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি জলধর মেঘমালা থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত করি, যাতে তা দ্বারা উৎপন্ন করি শস্য, উদ্ভিদ ও পাতাঘন উদ্যান।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ১৪-১৬)

তিনি আরও বলেন, ‘তিনিই স্বীয় রহমতের প্রাক্কালে বাতাসকে সুসংবাদবাহীরূপে প্রেরণ করেন এবং আমি আকাশ থেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্য পানি বর্ষণ করি। তা দ্বারা মৃত ভূভাগকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট জীবজন্তু ও অনেক মানুষের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য। আমি তা তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিতরণ করি, যাতে তারা স্মরণ করে। কিন্তু অধিকাংশ লোক অকৃতজ্ঞতা ছাড়া কিছুই করে না।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৪৮-৫০)

বজ্র-নিনাদে আল্লাহর একচ্ছত্র আধিপত্য

স্বাভাবিকতই বৃষ্টি ও বজ্রপাত প্রাকৃতির প্রক্রিয়া। মহান আল্লাহ তাআলা প্রকৃতির এ নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বজ্র-নিনাদের মাধ্যমে প্রকৃতি মহান আল্লাহর একচ্ছত্র আধিপত্য, তার পরিপূর্ণতা ও মহিমা বর্ণনা করে থাকে। এছাড়াও মেঘমালা সৃষ্টি ও বৃষ্টিপাত ঘটানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতারা মেঘের গর্জনের সৃষ্ট আতঙ্কে আরো বেশি আল্লাহর মহিমা ও গুণকীর্তন করেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তার (আল্লাহর) সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করে বজ্রধ্বনি এবং ফেরেশতারাও, সভয়ে (তাঁর তাসবিহ পাঠ করে)। তিনি বজ্রপাত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তা দিয়ে আঘাত করেন। তারপরও তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিত-া করে। অথচ তিনি মহাশক্তিশালী। ’ (সুরা রাদ, আয়াত : ১৩)

বজ্রপাতের কারণে প্রলয়ঙ্করী শব্দ হয়। বজ্রপাত কখনো কারো প্রাণ কেড়ে নেয়। আবার কখনো কারো কোনো ক্ষতি হয় না। এসব আল্লাহর নিরঙ্কুশ অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে।

বৃষ্টি রহমত, বৃষ্টি গজব

বৃষ্টি আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। কিন্তু কখনো আবার বৃষ্টি আজাবেও রূপ নিতে পারে। বৃষ্টির কারণে ও প্রাকৃতিক বৈরিতার কারণে অনেকে কষ্টে পড়তে পারেন। নানা ধরনের অসুবিধাও তৈরি হতে পারে।

আয়েশা (রাঃ) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত- তখন রাসুল (সাঃ)-এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি। অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণগুলো কামনা করছি, এই বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।’

এরপর যখন বৃষ্টি হতো- তখন মহানবী (সাঃ) শান্ত হতেন। আয়েশা (রাঃ) আরও বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন?’ এর জবাবে রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯) তাই ঈমানদারদের উচিত, আকাশে বৃষ্টির ভাব দেখলে বা বৃষ্টি আসবে আসবেÍ মনে হলে এই দোয়া পাঠ করা।

বজ্রপাত থেকে রক্ষার দোয়া

অন্যদিকে বজ্রপাত থেকে বাঁচার জন্য মহানবী (সাঃ) একটি বিশেষ দোয়া শিখিয়েছেন। এ দোয়া পাঠ করা হলে ইনশাল্লাহ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া পড়তেন- আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাজাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআজা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা জা-লিকা।’ অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫০)

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সাঃ) বজ্রপাতের শব্দ শুনলেই পড়তেন, ‘সুবহানাল্লাজি ইয়ুসাব্বিহুর রা‘অদু বিহামদিহি।’

ইবনে আবি জাকারিয়া থেকে বর্ণিত অন্য রেওয়ায়েতে আছে, তিনি বলেন, বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রে আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২৯২১৩)। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়