প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি চলছে। চাকুরি স্থায়ীকরণসহ বেশ কয়েক দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এই কর্মবিরতি শুরু করেন। গত ১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সদর দপ্তরের (প্রধান কার্যালয়) হাজীগঞ্জের সামনে চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও জরুরি গ্রাহকসেবা সচল রেখে সমিতির প্রধান কার্যালয় ও জোনাল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসমূহে শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যাহত রাখা, গুণগত মানহীন মালামাল ক্রয় করে গ্রাহক ভোগান্তি বৃদ্ধি করার প্রতিবাদ এবং স্মার্ট ও টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিআরইবি-পিবিএস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন ও সকল চুক্তিভিত্তিকসহ অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিতকরণের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যানারে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর এজিএম মুহাম্মদ ফারুক হোসেন, জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার মোঃ কামরুল ইসলাম, লাইন টেকনেশিয়ান মোঃ জহিরুল ইসলাম ও ফেরদৌস আহমেদ, মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার মোঃ সাইফুল ইসলাম ও ডাঃ মোঃ জালাল আহমেদ, বিলিং সহকারী শারমিন আক্তার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মিতু আক্তার প্রমুখ।
‘চুক্তি থেকে মুক্তি চাই’ উল্লেখ করে বক্তব্যে চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, একই পদে স্থায়ী চাকুরি করা আর তাদের সাথে একই যোগ্যতা ও একই প্রশিক্ষণে একই পদের অনিয়মিতদের সুযোগ-সুবিধার আকাশ-পাতাল ব্যবধান। এটা স্পষ্ট বৈষম্য। দিনের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি মানে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা না থাকা, বেসিক নেই, গ্রাচ্যুয়িটি নেই, অসুস্থতা ও মাতৃত্বজনিত ছুটিতে বেতন নেই, দুর্ঘটনায় তেমন কোনো সহযোগিতাও নেই অনিয়মিতদের। অপরদিকে নিয়মিতদের সকল সুবিধা দেয়া হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজে নিয়োজিত একমাত্র প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক প্রায় ১২ কোটি। সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমিতির তদারকি প্রতিষ্ঠান বিআরইবির দ্বৈত নীতির কারণে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এ সময় বক্তারা দাবি করে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজে গত বছর ২শ’ জন মারা গেছেন এবং বহু বিদ্যুৎকর্মী আহত হয়েছেন। কিন্তু তাদের পরিবার তেমন কোনো সহযোগিতা পায়নি। অথচ যারা স্থায়ী চাকরি করছেন, তারা সমিতির সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। অপরদিকে বিআরইবির অদক্ষতা ও নিম্নমানের সামগ্রীর কারণে হয়রানি ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সবাই। বিতরণ লাইনে ব্যবহৃত নিম্নমানের মালামালের জন্যে উত্তম গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না।
টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিনির্মাণে বিআরইবি-পিবিএস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখতে ও গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নের জন্যে সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে আর এসব বিষয়ের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে বক্তারা।