ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোচিত জেলে অনাথ দাস হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী সুবল দাস (৬০)কে আটক করেছে পিবিআই, চাঁদপুর। তাকে ঢাকার কামরাঙ্গীচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়। বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সুবল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ তথ্য চাঁদপুর কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক।

পিবিআই সূত্র জানায়, ১৯ জুলাই সোমবার সকালে হত্যার শিকার জেলে অনাথ দাস কড়ৈতলীর পার্শ্ববর্তী শাহীবাজারে মাছ বিক্রি করতে যান। মাছ বিক্রি করে তিনিসহ লোকজন কড়ৈতলী বাজারের একটি চায়ের দোকানে চা খান। পরে সেখানেই তার কাছে একটি ফোন-কল আসে। এরপর তার সঙ্গীদের কাছে ‘কাজ আছে বলে’ চলে যান। এরপর থেকে অনাথ দাসের আর খোঁজ মিলেনি।

শেষ পর্যন্ত নিখোঁজের সাতদিন পর অনাথ দাসের অর্ধগলিত দেহ উদ্ধার হয়। ফরিদগঞ্জ থানায় নিহতের ছেলে সুভাষ দাস মামলা দায়ের করেন। একই সাথে ছায়া-তদন্তে নামে পিবিআই। লাশ উদ্ধারের ৫ দিনের মধ্যে রহস্যভেদ করতে সক্ষম হন তারা।

পিবিআই আরও জানায়, জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে অর্থের বিনিময়ে অনাথকে হত্যা করে লাশ খালের পানিতে ফেলা দেয়া হয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সেকান্দর গাইন ওরফে শেখার ছোট ছেলে সোহাগকে আটক করে পুলিশ। সোহাগ হত্যার কথা স্বীকার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সোহাগের কাছ থেকে অনাথ দাসের মুঠোফোনটি উদ্ধার করা হয়। এ হত্যাকা-ের সাথে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের মূল হোতা সুবল দাসসহ ৪ জন জড়িত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু বকর ছিদ্দিক চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, সোহাগ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর আমরা মামলার প্রধান আসামী সুবল দাসসহ অন্যদের আটকে প্রযুক্তির সহযোগিতায় নানাভাবে তৎপরতা শুরু করি। সর্বশেষ আমাদের কাছে, সংবাদ আসে সুবল দাস ঢাকার কামরাঙ্গীচর এলাকায় রয়েছে। আমরা পরবর্তীতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে ধরতে সক্ষম হই। বুধবার (২৫ আগস্ট) চাঁদপুরে নিয়ে এসে অনাথ দাস হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করি। পরবর্তীতে সে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

উল্লেখ্য, পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের খুরুমখালী গ্রামের জেলে অনাথ দাস ১৮ বছর পূর্বে নিজের চাচাতো ভাই সুবল দাসের কাছ থেকে ৩ শতক জমি ক্রয় করেন। সেই ক্রয়কৃত জমি তিনি শেষ পর্যন্ত বুঝে পাননি। কিন্তু জমির দখলস্বত্ব বুঝে পেতে বছরের পর পর সালিস-বৈঠকসহ সকল কিছুই করেছেন। ত্রিশ হাজার টাকা জমির জন্যে খরচ করেছেন লক্ষ টাকা। শিকার হয়েছেন মারধরের।