প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০
কচুয়ায় পৌর বাজারের ইকরা ভ্যারাইটিজ স্টোরের স্বত্বাধিকারী আবুল বাশার (৩৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছালেহ মুসাকে (২০) গ্রেফতার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মুসা কচুয়া পৌরসভাধীন কড়ইয়া গ্রামের ইব্রাহীমের ছেলে।
কচুয়া থানার ওসি মোঃ মহিউদ্দিন জানায়, গত রোববার রাতে পুলিশ ছালেহ মুসাকে পাশর্^বর্তী কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার আলেখারচর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে কচুয়া থানায় নিয়ে আসে। গতকাল সোমবার কচুয়া আমলী আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। পরে আদালতে হাজির করার মধ্য দিয়ে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে ছালেহ মুসা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আবুল বাশারকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসাশন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, এটি একটি নৃশংস ঘটনা। ব্যবসায়ী বাশার ও ছালেহ মুসার মধ্যে টাকাণ্ডপয়সার লেনদেন নিয়ে ঝামেলা ছিলো। দুপুরের দিকে বাশারকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে লাশ ফেলে রাখে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় ছালেহ মুসা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে আবুল বাশার দোকানে আসার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি কচুয়া পৌরসভাধীন কোয়া চাঁদপুর হাজী বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি দোকানে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ১০টার দিকে তার নিখোঁজের বিষয়ে কচুয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে শনিবার রাত ৩টার দিকে কচুয়া বিশ্বরোডে অবস্থিত মুসার মাছের আড়তে আবুল বাশারের রক্তভেজা লুঙ্গি, গামছা ও একটি বিছানার চাদরসহ দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে রক্তের চিহ্ন দেখতে পায়। পরে কচুয়া থানা পুলিশ রোববার বিকেল ৩টার দিকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর গ্রামে একটি বস্তাবন্দী গলাকাটা লাশের সন্ধান পায়। এ ঘটনায় আবুল বাশারের স্ত্রী বাদী হয়ে প্রধান আসামী ছালেহ মুসাসহ ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে গতকাল সোমবার আবুল বাশারের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকাবাসী। মিছিলটি কোয়া চাঁদপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে কোয়া, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ, কচুয়া বিশ্বরোড, পৌর বাজার ও কচুয়া থানা এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সোমবার দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আবুল বাশারের লাশ তার নিজ গ্রামে নিয়ে আসা হলে তার আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী মধ্যে গগণবিদারী কান্নার রোল শুরু হয়। পরে বাদ জোহর কোয়া চাঁদপুর হাজী বাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।