প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২১, ০৯:২৭
কোপা আমেরিকা-২০২১ : চাঁদপুরের এসপি, এএসপি সকলেরই পছন্দের দল আর্জেন্টিনা
দরজায় কড়া নাড়ছে কোপা আমেরিকা-২০২১ এর ফাইনাল। ১১ জুলাই বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরিও শহরের মারাকানা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ফুটবল প্রেমীদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত ম্যাচ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার স্বপ্নের ফাইনাল।
|আরো খবর
দেশের আবাহনী-মোহামেডান ফুটবলের সেই জৌলুস এখন আর নেই তবে বাঙ্গালীর মনে এখনো রয়ে গেছে সুদূর দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দু'টি দেশ ব্রাজিল আর্জেন্টিনার খেলার উত্তেজনা। দু'টি দলের খেলা মানেই ভিন্ন রকম এক স্নায়ু যুদ্ধ বয়ে যায় ক্রীড়ামোদীদের মনে। মূহুর্তেই বিভক্ত হয়ে যায় পুরো দেশের ফুটবল সমর্থকগণ। এ আমেজ শুধু সাধারণ মানুষের মধ্যে নয়, ফুটবলের উন্মাদনা, উত্তেজনা সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর জেলার রাজনীতিবিদ, প্রশাশন ও সুশীল সমাজকেও স্পর্শ করেছে।
চাঁদপুর পুলিশ প্রশাসনের নেতৃত্বস্থানীয় কে কোন দলের সমর্থক এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় চাঁদপুর কণ্ঠের ক্রীড়াকণ্ঠ বিভাগ থেকে। চাঁদপুর পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ বিপিএম বার জানান, তাঁর পছন্দের ফুটবল দল আর্জেন্টিনা। তবে তিনি কোন দলের অন্ধভক্ত নন। ভালো খেলে বলেই ছাত্র জীবন থেকে আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করে আসছেন। ৮৬ সালের পর ম্যারাডোনার ফুটবলের ছন্দের খেলাগুলো অনেকের মত তাঁকেও বিমোহীত করেছিলো। তাই ছাত্রজীবন থেকে অদ্যবধি আর্জেন্টিনা দলটিকেই সমর্থন জানিয়ে আসছেন।
ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, যখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে ছিলেন তখন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা হলেই হলের সকল ছাত্ররা দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যেতো। খেলার সময় টিভি দেখার হল রুমে ব্রাজিল সমর্থকরা একদিকে, আর্জেন্টিনা সমর্থকরা অন্যদিকে অবস্থান নিতো। যে দলের গোল হতো উৎসবে মেতে উঠতো আর গোল হজম করা দল হতাশায় মুখ লুকাতো। এ বিষয়টির মধ্যে অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করতো।
ক্রীড়াকণ্ঠ থেকে কথা বলা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় এর সাথে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দু'টি দলের মধ্যে কোন দল সমর্থন করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আর্জেন্টিনার শুধু সাপোর্টারই নই, একেবারে মনে-প্রাণে একজন আর্জেন্টাইন ফুটবল টিমের ভক্ত।
'প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের অনেকেই মনে করেন ২৮ বছর আপনারা কোন শিরোপা জিততে পারেননি এবারও পারবেন না এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রীয়া কী? জানতে চাইলে সুদীপ্ত রায় বলেন, প্রয়োজন নেই শিরোপার। আর্জেন্টিনা দলটাইতো একটা শিরোপা। আমরা ম্যারাডোনা মেসির সুন্দর খেলা দেখে আর্জেন্টিনার ফুটবলের প্রেমে পড়েছি। কে কয়টা কাপ আর কয়টা শিরোপা জিতলো সেসব আমাদের কাছে মূখ্য নয়।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে ছাত্রজীবনের কোন মধুর স্মৃতি মনে পড়ে? এমন প্রশ্নে অট্টোহেসে সুদীপ্ত রায় চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, স্মৃতিতো অনেকই আছে। তার মধ্যে বন্ধুদের সাথে ঘটা সবচেয়ে মজার স্মৃতি হলো বিশ্বকাপে ব্রাজিল জার্মানির কাছে ৭ গোল খাওয়া। খেলার আগেরদিন ব্রাজিলের বন্ধুরা এই করবে, সেই করবে, এবার তারা বিশ্বকাপ নিবে আরও কত কি যে বললো! আর রাতে ৭টা গোল খেয়ে পরদিন আর তাদের দেখা যায় না। তারা লজ্জায় ঘর থেকেই বেরই হয়নি তখন। আমরা আর্জেন্টিনার সমর্থক বন্ধুরা মজা করে বলছিলাম ব্রাজিলের বন্ধুরা ৭ গোল খেয়ে ৭ দিন পর ঘর থেকে বের হবে। এমন অনেক মজার ঘটনা আছে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা নিয়ে।
সম্প্রতি দু'দলের পার্ফরম্যান্স বিবেচনায় ১১ তারিখ সকালে কোন দল জিতবে বলে মনে করেন প্রশ্ন করতেই সুদীপ্ত রায় জোর দিয়ে বলেন, অবশ্যই আর্জেন্টিনা জিতবে।
চাঁদপুর কণ্ঠ থেকে কথা বলা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাঁদপুর সদর সার্কেলের সাথে। তাঁর কণ্ঠেও উচ্চারিত হয় সেই একই নাম, আর্জেন্টিনা। তাঁর মতে ৯০ দশকে যারা ছাত্র জীবন পার করেছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই আর্জেন্টিনার সমর্থক কেননা তখন ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত ম্যারাডোনার ফুটবল খেলা ভালো লাগতো না এমন লোক খুব কমই ছিলো। সেই থেকে এখনো আমরা আর্জেন্টিনার পক্ষেই রয়ে গেলাম। ছাত্রজীবনে বন্ধুদের মধ্যে অনেক দুষ্টুমি হতো এসব নিয়ে। প্রতিবার বিশ্বকাপ আসলেই আমরা আমাদের বাড়ির ছাদে আর্জেন্টিনার বড় পতাকা লাগাতাম। জানান দিতাম আমরা আর্জেন্টিনার সাপোর্টার।