সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫  |   ৩২ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
  •   রোগীর চাপে বেসামাল চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল!
  •   মেঘনাপাড়ের দুটি রাস্তা ও কৃষকের বসতঘর বিলীনের পথে
  •   র‌্যাবের অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও আতশবাজি উদ্ধার, আটক ১

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ১৪:০৭

হাসিনা-কাদেরের ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বিএনপি নেতার ছবি ভাইরাল

নোয়াখালী প্রতিনিধি
হাসিনা-কাদেরের ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বিএনপি নেতার ছবি ভাইরাল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ সহচর, একাধিক মামলার আসামি দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে একই সারিতে নিয়ে অনুষ্ঠান করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ।

রোববার (২০ জুলাই ২০২৫) বিকেল থেকে এমন একটি ভিডিও ও ক'টি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে । এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে।

জানা যায়, গত ১৯ জুলাই দুপুরের দিকে আমেরিকার সানকেন মিডোজ স্টেট পার্কে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর-মুছাপুর ইয়াং স্টার আয়োজনে গেট টুগেদার ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুছাপুর ও রামপুর ইউনিয়নের প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরর ঘনিষ্ঠ সহচর মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান ও নিউইর্য়ক স্টেট আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী ও রামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরীকে একই সারিতে বসিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ। নেতাকর্মী ওই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে নিন্দার ঝড় তোলেন। এ নিয়ে নোয়াখালীর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী ও রামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরী। অভিযোগ রয়েছে, ওবায়দুল কাদের ও তার ছোট ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আত্মগোপনে থাকা সভাপতি আব্দুল কাদের মির্জার অবৈধ অর্থ পাচারের মূল হোতা নিউইর্য়ক স্টেট আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী। এ ছাড়াও আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে মুছাপুর ক্লোজার থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন, মুছাপুর ক্লোজার এলাকার ৬শ' একর খাস জমি দখল করে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এই দুই আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের ও তার ছোট ভাই কাদের মির্জার নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর গত ১৭ বছর দমন নিপীড়ন চালিয়েছেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তারা গোপনে আমেরিকায় পালিয়ে যান। আওয়ামী লীগ নেতা আইয়ুব আলীর সাথে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ব্যাপক ঘনিষ্ঠতা ছিলো। এমন বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ছবি দিয়ে বিএনপি সমর্থক তাফসির হোসেন নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, প্রিয় আবেদ ভাই। নোয়াখালী ৫ আসনের নেতাকর্মীরা আপনার থেকে এমন কিছু আশা করে নাই। আওয়ামী দোসরদের সাথে আপনার ছবি দেখে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। জিয়াউর রহমান নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, নোয়াখালী ৫ আসনের এমপি প্রার্থী আবেদ সাহেব কি আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের দায়িত্বে নামছেন নাকি! ভালো খুব ভালো, এগিয়ে যান।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ১৩-১৪ হাজার মাইল দূরে গিয়ে সবার সাথে একত্রিত হতে পারায় শোকরিয়া আদায় করেন। এ সময় তিনি উপস্থিত সকলের সুস্বাস্থ্য, নেক হায়াত ও সবার হেদায়েত কামনা করেন আল্লাহর কাছে।

এ বিষয়ে জানতে নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী ও রামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল বাহার চৌধুরীর মুঠোফোনে কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি। তাই এ বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

যোগাযোগ করা হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ বলেন, গত ১২ জুলাই আমি আমেরিকা আসি। ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ এসে আমার এলাকার দুটি ইউনিয়নের গেট টুগেদারের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়। অনুষ্ঠানে আর কারা ছিলো এ বিষয়ে তারা আমাকে কিছু বলে নাই। আমিও জানি না। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতাকে আমি চিনি না। তাদের সাথে আমার পরিচয়ও নেই। ওটা জাস্ট একটা পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠান ছিলো। আয়োজকরা বলেছে কেউ বক্তব্য রাখবে না। আপনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, ২ মিনিট শুভেচ্ছা জানাবেন। ওরা দুজনই কাদের মির্জার সাথে ক্লোজ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও ছিলো--আমি পরে খবর নিয়ে জেনেছি। কিন্ত আয়োজকরা আমাকে তাদের বিষয়ে সতর্ক করলে এ ছবি উঠতো না। ২-১জনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিয়ে পোস্ট করেছে বলে শুনেছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়