প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভায় মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি
যারা সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের সমূলে উৎখাত করা হবে
যারা বুকে এখনো পাকিস্তানি পতাকা ধারণ করে আছেন, তারা প্রয়োজনে ওপেন হার্ট সার্জারি করে পতাকা ফেলে দিন
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর যতো বিখ্যাত পণ্ডিত ব্যক্তি বা ধর্মীয় ব্যক্তি ছিলেন বা রয়েছেন তারা প্রত্যেকেই তাদের কথায় মানুষকেই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বলে গেছেন। সেখানে কোনো জাতের কথা বলা হয়নি। অর্থাৎ চৈতন্য দেবের ‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই’ এ কথাটি সত্য বলেই আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। একইভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মণ্ডবর্ণ-নির্বিশেষে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তেমনি তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রীতির কথা তুলে ধরে বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার এবং ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা আবহমান কাল থেকে হিন্দু-মুসলিমণ্ডবৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ একত্রেই থেকেছি। ঈদণ্ডপূজা-পার্বণে একে অপরের উৎসবে ভাগিদার হয়েছি। কিন্তু একটি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র আমাদের এই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে ভুলুণ্ঠিত করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। গত বছর কুমিল্লায় দুর্গাপূজার সময় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল। কিন্তু সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে দ্রুত সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসে। তাই আমাদের এ বছর পূজাকে সামনে রেখে সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি-জামাতসহ প্রতিক্রিয়াশীলরা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের উস্কানি দেয়া শুরু করেছে। আমরা বলতে চাই, সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড আমরা সম্প্রীতি দিয়েই মোকাবেলা করবো। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকারীদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবো।
|আরো খবর
তিনি বলেন, আমাদের মহানবী হযরত মোহম্মদ (সাঃ) মদিনা সনদে উল্লেখ করে গেছেন সম্প্রীতির কথা। একই ভাবে প্রতিটি ধর্মেই মানুষের মঙ্গলের কথা বলা হয়েছে। তাই কারো মন্দির ভেঙ্গে, কারো মসজিদ ভেঙ্গে বা জমি দখল করে কোনো কিছুই হাসিল করা সম্ভব নয়। বরং যারা এসব করে তারা নিজেদের মনুষ্যত্বকে নষ্ট করে দেয়। সমাজ তাদের কোনো দিনও ভাল চোখে দেখে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, এদেশের সম্প্রীতির ইতিহাস হাজার বছরের। তাই যারা সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের সমূলে উৎখাত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যারা বুকে এখনো পাকিস্তানী পতাকা ধারণ করে আছেন, তারা প্রয়োজনে ওপেন হার্ট সার্জারি করে পতাকা ফেলে দিন। একইভাবে যারা বাংলাদেশ ও ভারত দু দেশকে নিজেদের দেশ ভাবেন তাদেরও সেটি পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ অনেক রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। কারো দানে-অনুগ্রহে আমরা এই দেশ পাইনি। জাতির পিতা সারাটা জীবন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার যেই স্বপ্ন দেখেছেন, তা তিনি স্বাধীনতার মাধ্যমে আমাদের দিয়ে গেছেন। তাই যারা এখনো পাকিস্তান ভাল ছিল বলে রাজপথে গলা ভেজান, তারা সাবধান হয়ে যান। আপনাদের স্বপ্ন কোনোদিন পূরণ হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছার সভাপ্রধানে ও একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওসি (তদন্ত) প্রদীপ মণ্ডল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম, ফরিদগঞ্জ উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল, আওয়ামী লীগ নেতা আমির আজম রেজা, আওয়ামী লীগ নেতা খাজে আহমেদ মজুমদার, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার হেড মুহাদ্দিস মাওলানা মমিনুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান শাহআলম শেখ, উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটি সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস।