নারী নির্যাতনের দায়ে স্ত্রীর মামলায় স্বামী কারাগারে

নারী নির্যাতন ও যৌতুকের জন্যে নিয়মিত স্ত্রীকে মারধর করে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় কারাগারে গেলেন মাহমুদুল হাসান রিয়াদ নামে এক স্কুল শিক্ষক। চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডের জোড় পুকুর পাড়ের বাসিন্দা মৃত মুহাম্মদ মজিবুর রহমানের ছেলে রিয়াদ। বহু নারীতে আসক্ত, বিভিন্ন ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কসহ মাহমুদুল হাসান রিয়াদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তার স্ত্রীর। ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট বিয়ের পর প্যাথলজি ব্যবসা করার নাম করে স্বামী রিয়াদ ও তার মা বার বার মোটা অংকের যৌতুকের জন্যে চাপ দেয়। রিয়াদ তখনো বেকার ছিলো বিধায় নিরূপায় হয়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে ৫ লাখ টাকা তুলে দেন রিয়াদের হাতে তার শ্বশুর। এরপর ২০২২ সালে রিয়াদের শিক্ষক হিসেবে চাকুরি হয়। রিয়াদ বর্তমানে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নওগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ২০২২ সালে ব্যবসার পাশাপাশি শিক্ষকতা শুরু করার পর ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর নামে আরো ৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্যে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। টাকার জন্যে রিয়াদ তার স্ত্রীকে মারধর করেন। এর মধ্যে তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তান। রিয়াদের শ্বশুর তার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পুনরায় রিয়াদকে আরো ৫ লাখ টাকা দেয় ব্যবসা করার জন্যে। কিন্তু রিয়াদ আরো টাকা চায় স্ত্রী শান্তার পরিবারের কাছে। এই টাকার জন্যে স্ত্রীকে বার বার মারধর করে রিয়াদ ও তার মা। এর মধ্যে 'রিয়াদ মাস্টারে'র বিভিন্ন ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের তথ্য প্রকাশ পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রী জানান, তার সাথে রিয়াদের সম্পর্ক ছিলো। রিয়াদ তার সাথে প্রতারণা করেছে। সে বলেছে সে এখনো বিয়ে করেনি। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

এদিকে তার স্ত্রী শান্তার অভিযোগ, রিয়াদ বহু নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত রয়েছে। এসব প্রেমের বিষয়ে স্ত্রী অভিযোগ করলে স্ত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ইতোমধ্যে কয়েকবার স্ত্রীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালান রিয়াদ ও তার মা। জীবনের নিরাপত্তাহীনতা থাকার কারণে নিরূপায় হয়ে গত ১৫.০২.২০২৫ খ্রি. তারিখে শান্তা বাদী হয়ে তার স্বামীর বিরুদ্ধে চাঁদপুর শিশু ও নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় 'রিয়াদ মাস্টার'কে গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ জোড় পুকুর পাড়ে অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। জেলে থেকেও রিয়াদ বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে মামলা তুলে নেয়ার জন্যে স্ত্রী ও স্ত্রীর পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে স্ত্রী ও তার পরিবার।

মামলার বাদী শান্তা বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আমি আদালতের কাছে সঠিক বিচার চাই।