প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩:৫৩
আফগান নতুন প্রধানমন্ত্রী কে এই মোল্লা হাসান আখুন্দ?
আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান। দেশটির নতুন এই সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। কোনো নারীর স্থান না হওয়া নতুন এই সরকারে এমন সব জ্যেষ্ঠ ও কট্টরপন্থি তালেবান নেতাদেরকে স্থান দেওয়া হয়েছে, যারা গত দুই দশক ধরে দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর জঘন্য সব হামলা পরিচালনার জন্য অভিযুক্ত।
|আরো খবর
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আফগানিস্তানের নতুন সরকারপ্রধান মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ জাতিসংঘের কালো তালিকায় রয়েছেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে তালেবানের প্রথম দফার সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ওই সময়ে তালেবান সরকারে দায়িত্ব পালন করার কারণেই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।
এছাড়া ১৯৯৪ সালে যে চারজন মিলে আফগানিস্তানে তালেবান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তাদের একজন। তিনি সবচেয়ে বেশিদিন ধরে তালেবানের নেতাদের কাউন্সিল বা রেহবারি শুরার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রভাবশালী রেহবারি শুরা তালেবানের নীতিনির্ধারণী ফোরাম হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানান, নতুন প্রধানমন্ত্রী মোল্লা হাসান আখুন্দের ডেপুটি হিসেবে অর্থাৎ উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করবেন তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার।
আলজাজিরা বলছে, তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের সান্নিধ্য পাওয়ার কারণেই গ্রুপটির অন্যান্য সদস্যদের কাছে অনেক বেশি সম্মানের পাত্র বিবেচিত হন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ।
মোল্লা আখুন্দ কান্দাহারের বাসিন্দা। আফগানিস্তানের এই স্থানটি তালেবানের জন্ম স্থানও। জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে মোল্লা ওমরের ‘ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও রাজনৈতিক উপদেষ্টা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তালেবানের একটি সূত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, সংগঠনের ভেতরে মোল্লা আখুন্দের সম্মান অনেক বেশি। বিশেষ করে তালেবানের শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাও তাকে অনেক বেশি সম্মান করে থাকেন।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বর্তমানে মোল্লা আখুন্দের বয়স ষাটের মাঝামাঝি বা এর থেকে কিছুটা বেশি। তাদের দৃষ্টিতে, ধর্মীয় ব্যক্তি হিসেবে যতটা তার চেয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে মোল্লা আখুন্দের প্রভাব ও ভূমিকা বেশি। তালেবানের শীর্ষ নেতৃত্ব ও কাউন্সিলের ওপর আখুন্দের প্রভাবের কারণে সামরিক বিষয়াদিতেও তার মতামত বড় ধরনের গুরুত্ব বহন করে। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা আহমদ শাহ দুররানির পশতুন বংশধর মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। অষ্টাদশ শতাব্দীতে দুররানি আধুনিক আফগানিস্তান গড়ে তুলেছিলেন। এছাড়া ইসলাম ও ধর্মীয় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন মোল্লা আখুন্দ।