প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
ঘাড়ব্যথা : ব্যথা কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা কার্যকর। বিশেষ করে পদ্ধতিগত ব্যায়াম; যেমন হাত দিয়ে মাথার চারপাশ চাপ দিয়ে ঘাড়ের মাংসপেশি শক্ত করে দুই কাঁধ এক করে ওপরের দিকে তোলা, মাঝারি আকারের বালিশ ব্যবহার ইত্যাদি। ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে চিকিৎসা, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, মেনিপুলেশন এবং প্রয়োজনমতো ট্রাকশন রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে। ঘাড় অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া থেকে বিরত রাখা এবং সাপোর্ট দিতে সারভাইক্যাল কলার ব্যবহার, মাথার নিচে মাঝারি আকারের বালিশ ব্যবহার করলে রোগমুক্তি সম্ভব।
কোমরব্যথা : শক্ত বিছানায় শোয়া, কাত হয়ে বিছানায় শুতে যাওয়া ও ওঠা, ভারী জিনিস বহন না করা বা না তোলা, নিয়মিত কোমরের ব্যায়াম করা এবং অসমতল জায়গায় চলাচল না করলে এ ব্যথা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি ও থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করলে রোগীর পক্ষে ব্যথামুক্ত জীবন যাপন করা সম্ভব।
শোল্ডার জয়েন্ট ব্যথা : এ রোগের চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, আইএফটি ব্যবহার করে ব্যথা কমানো যায়। ইলেকট্রোথেরাপির সঙ্গে জয়েন্টের সচলতা বাড়ানোর জন্যে বিভিন্ন ধরনের থেরাপিউটিক ব্যায়াম, যেমন মোবিলাইজেশন ও মেনিপুলেশন এক্সারসাইজ এবং বিভিন্ন রকম কৌশলগত ব্যায়াম করানো হয়। এছাড়া শোল্ডার ব্যথার রোগীদের নিয়মিত সাঁতার কাটা এবং ব্যবহারিক ব্যায়াম, যেমন দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে হাত আস্তে করে ওপরে তোলা, তোয়ালে দিয়ে পিঠ মোছা ইত্যাদি করতে হয়।
হাঁটুব্যথা : কোনোভাবেই এমন কাজ বা ব্যায়াম করা ঠিক হবে না, যাতে ব্যথা বাড়ে। হাঁটু অতিরিক্ত ভাঁজ না করা, ওজন স্বাভাবিক রাখা বা বাড়তি ওজন কমানো, নামাজ আদায় করার সময় চেয়ার এবং বাথরুম ব্যবহারে কমোড ব্যবহার বাঞ্ছনীয়।
পরামর্শ
* ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিন। ব্যথার স্থানে ১০-১৫ মিনিট গরম বা ঠা-া সেঁক দেবেন
* বিছানায় শোয়া-ওঠার সময় যেকোনো একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোবেন বা উঠবেন
* ঘাড় নিচু করে কোনো কাজ করবেন না। পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদ- সোজা করে বসবেন। ফ্লোরে বিছানায় না শুয়ে শক্ত ও সমান বিছানায় শোবেন
* মাথা বা হাতে ভারী বোঝা বহন করা নিষেধ। দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করবেন।
* ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের নির্দেশমতো দেখানো ব্যায়াম নিয়মিত করবেন; ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখবেন
* শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন
* সিঁড়িতে ওঠার সময় হাতল ধরে উঠবেন। চেয়ারে বসে গোসল করবেন। কোনো ধরনের মালিশ করবেন না
* দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না, দ্রুত অবস্থান বদলাবেন।
* হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না; নরম জুতা ব্যবহার করবেন।
এম. ইয়াছিন আলী : ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।
* চিকিৎসাঙ্গন বিভাগে লেখাসহ স্বাস্থ্যবিষয়ক যে কোনো প্রশ্ন পাঠান।
ই-মেইল : রহঃড়.ধষধসরহ@মসধরষ.পড়স