সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

ভূতের আলো
পীযূষ কান্তি বড়ুয়া

ভূত বলে যে কিছু নেই তা আমি জানি। আমার মামা একথা বলেছে। মামা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে। নিজেই নিজের ঘরে একটা গবেষণাগার তৈরি করে ফেলেছে। তার সেই গবেষণাগারে সবাই যেতে পারে না। মামা কিন্তু আমাকে যেতে দেয়। আমি গিয়ে এটা-সেটা নাড়ি। নাড়তে নাড়তে অনেক কিছুই উলোট-পালট করে ফেলি। মামা তাতে মাঝেমধ্যে রাগ হয়। তবে গবেষণাগারে আমার প্রবেশেবনিষেধাজ্ঞা দেয়নি। এবার অনেকদিন হলো মামাবাড়ি যাওয়া হয় না। ফলে মামার নতুন গবেষণার যন্ত্রপাতিগুলোও নেড়ে-চেড়ে দেখা হয়নি। নানীর জোরাজুরিতে এবার মা রাজি হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষার পর মামার সাথে মামাবাড়ি পাঠাতে।

আমার মামাবাড়ি কিন্তু গ্রামে। গ্রাম হলেও শহরের সুবিধাগুলো সব সেখানে আছে। এমনকি আধুনিক খাবারের দোকানও আছে। মামাবাড়িতে গেলে আমি এসব দোকানের রেসিপি টেস্ট করে দেখি। শহর বা রাজধানীর চেয়ে কোনো অংশেই খারাপ না। এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। লঞ্চ থেকে নেমেই মাঝপথে রিকশা থামিয়ে মামা আর আমি চিকেন ব্রোস্ট আর স্যুপ ডাউনলোড করে ফেললাম। তারপর হেলতে হেলতে দুলতে দুলতে নানীর কাছে গেলাম। নানী তো অনেকদিন পরে দেখে চোখের জল ফেলে দিলো আবেগে। ‘বড় ভাই কেমন আছেন?’ বলেই নানী আদর করা শুরু করলো মাথার চুলে। নানীর কাছে বেড়াতে এলে মনে হয় আমি রাজা। কারো কথা আমি শুনি না, আমার কথাই সবাই শোনে।

ঘরে ঢুকেই আমি মামার গবেষণাগারে হানা দিই। অনেক নতুন নতুন যন্ত্রপাতি মামা এনেছেন। কিছু চিনি আর কিছু চিনি না। একটা যন্ত্র আছে যেটার নল দিয়ে লাল আলো বের হয়। এ আলোয় নাকি দেয়ালের ওপারে কেউ আছে কি না তা-ও দেখা যায়। দেয়াল যতো নিরেটই হোক না কেনো। অনেকটাই এক্স-রের মতো। এক্স-রে যেমন দেহের মাংস ভেদ করে হাড়ের ছবি তোলে তেমনি নল দিয়ে বের হওয়া লাল আলোও নিরেট দেয়াল ভেদ করে ওপারের মানুষের ছবি তুলে আনে। এই যন্ত্রটা আমার বিজ্ঞানী মামা নিজেই বানিয়েছে দিনের পর দিন কষ্ট করে। এই নলের যন্ত্রটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমি তক্কে তক্কে থাকি কখন একটু আলাদা সুযোগ পাবো যন্ত্রটা নিজের হাতে ধরে দেখার।

রাতে খাবারের আয়োজন বেশ ভালো ছিলো। নানীর রান্না মানেই অমৃত। আমি অবশ্য চিকেন রোস্টই বেশি খাই। মুরগীর সাদা রোস্ট নানীর চেয়ে মা-ই ভালো বানায়। প্রথম মা আর দ্বিতীয় হলো নানী। খাওয়া-দাওয়ার পর নানীর সাথে ঘুমুতে গেলাম। নানী শুয়ে শুয়ে গল্প বলে। রূপকথার গল্প। নানী খুব বেশি গল্প জানে না। হাতে গোণা চার-পাঁচটা। ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমী, কানা-কুঁজো, কঙ্কাবতী, সুয়োরাণী-দুয়োরাণী, বাক্শোভূত...এই ক’টা গল্পের বাইরে নানী আর কোনো গল্প জানে না। তবু তার বলার ঢঙের কারণে গল্পগুলো বারবার শুনতে ভালো লাগে। তবে আজ কিন্তু আমার মন আর গল্পে নেই। আমার মন পড়ে আছে নল হতে বের হওয়া লাল আলোর যন্ত্রের কাছে। যন্ত্রটা খুব বেশি বড় না। আমি এক হাতে নিতে পারবো এমন আকারের।

নানীর গল্প শুনতে শুনতে আমি ঘুমের ভাণ ধরে পড়ে থাকি বিছানায়। একটু পরেই মামা আর নানীর নাক ডাকা শুনতে পাই। আমি ধীরে ধীরে সন্তর্পণে উঠে আগে টয়লেটে যাই। তারপর টয়লেট সেরে বের হয়ে আস্তে আস্তে মামার গবেষণাগারে প্রবেশ করি। বেশিক্ষণ খুঁজতে হলো না যন্ত্রটা। যে জায়গায় সন্ধ্যায় ছিলো সে জায়গায়ই আছে। যন্ত্রটা নিয়ে দেখতে থাকি হাতে। খুব সাদামাটা যন্ত্র। অথচ কাজটাই তার জটিল। টর্চের হাল্কা আলো জ্বেলে আমি মামার ভূতের আলোর মতো লাল আলো বের হওয়া যাদুর যন্ত্রটা নিয়ে নাড়াচাড়া করি। কোন্ সুইচ টিপলে আলো জ্বলে তা হাতড়াতে গিয়ে হুট করে আলো জ্বলে উঠলো। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু ভয়ের যে সবেমাত্র শুরু তা আমি জানতাম না মোটেও।

মেশিনটা নিয়ে আস্তে আস্তে আমি দেয়ালের কাছে এসে পড়ি। এই দেয়ালের ওপারেই একটা পচা পুকুর আছে। আমি জানি সেটা। সে পচা পুকুরে কচুরি পানা আর সাপ-খোপে ভরা। আমার খুব ইচ্ছে হলো রাতে এ পুকুরের অবস্থাটা কী তা জানতে। আমি আর দেরি না করে সুইচ অন করলাম। ও মা! আলো দেখি জ্বলে না। কারণ কী? আমি চিন্তা করে কূল না পেয়ে ঘেমে উঠলাম। নাহ্! মামার কাছ থেকে কৌশলে জেনে নিতে হবে মেশিনটা কীভাবে চালাতে হয়। প্রায় আধাঘণ্টা মেশিনটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম। অগত্যা ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিছানায় এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখি বেলা অনেক গড়িয়ে গেছে। শহরে সকাল দশটা বাজলেও মনে হয় ভোর হয়নি। আর গ্রামে সকাল সাতটা বাজলেই মনে হয় বেলা অনেক হয়ে গেছে। চারদিক আলোময় ফর্সা। কোলাহল ক্রমশ বাড়তে থাকে। নানীর তৈরি করা নাশতা খেয়ে আমি বের হয়ে পড়ি পাড়ার ছেলেদের সাথে। গ্রামের ছেলেরা একটু বেশি সাহসী হয় শহরের ছেলেদের চেয়ে। কী অবলীলায় তারা চড়ে বসে গাছের মগডালে! আমি গাছে চড়তে জানি না। শিখিওনি কোনোদিন। একজনকে দেখলাম গাছের মগডালে চড়ে পাখির বাসা খুঁজতে। বকেরা নাকি বেশিদিন হয়নি এ গাছে ডিম পেড়েছে। বেশিক্ষণ খুঁজতে হয়নি, বকের বাসা পাওয়া গেছে। তবে বাসায় কোনো ছানা নেই। মনে হয় ছানাসহ বক মাছ শিকারে গেছে। যে খবর দিয়েছে সে হয়তো দিনক্ষণ ঠিকমতো বলতে পারেনি। আরো আগে বক হয়তো ডিম পেড়েছিলো। এখন ডিম ফুটে বকের ছানারা অনেক বড় হয়ে গেছে, যাতে উড়তে পারে। গাছে গাছে, বনে-বাদাড়ে ঘুরে ঘুরে সকাল কখন যে দুপুর হয়ে গেলো তা টের পেলাম না। টের পেলাম যখন পেটে ছুঁচোর দৌড় শুরু হলো তখন। ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে ফিরলাম নানীর কাছে। নানী একটু বকা দিলেন। বড়ভাই কই গেছিলেন? মায়ে ফোন দিছিলো আপনার সাথে কথা বলতে। আমি হেসে দিলাম নানীর বকা দেয়ার ধরন দেখে। তারপর নানীর ফোন থেকে মাকে ফোন দিয়ে বললাম কী কী করলাম কাল থেকে আজ। তবে ভূতের আলোর যন্ত্রের কথা কিন্তু মাকে বলিনি।

দুপুরের খাওয়া হলো খুব জম্পেশ। তারপর বুক শেল্ফ থেকে একটা বই খুঁজে নিলাম। আফ্রিকার রূপকথার বই। বেশি মোটা না। সব মিলিয়ে বারোটা গল্প। চৌষট্টি পৃষ্ঠার বই। এক ধরাতেই বইটা শেষ করতে পারবো ভেবে হাতে নিলাম। গল্পগুলো আমাদের রূপকথার মতোন না। কেমন যেনো বানানো গল্পের মতো। পড়তে পড়তে চোখে ঘুম চলে এলো। ঘুম যখন ভাঙলো তখন মামা এসে বসলো আমার বিছানার পাশে। মামাকে কাছে পেয়ে বললাম, মামা আমাকে তোমার ভূতের আলোর যন্ত্রটা চালাতে শিখিয়ে দিও। প্লিজ। মামা বলে উঠলো সাথে সাথে, ওহ্! কালকে তাহলে তুইই যন্ত্রটা ধরেছিলি! আমি তো যন্ত্রটা জায়গা বরাবর না দেখে অবাক হয়েছিলাম। এখন সে না বুঝলাম, আমার যন্ত্রটা কোন্ ভূতে ধরেছে। শোন মামা, আজ রাতে অমাবস্যা। চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার থাকবে চারদিক। আজ রাত বারোটার পরে আমরা যন্ত্রটা দিয়ে দেখবো, বাইরে কী কী জীবজন্তু রাতে ঘুরে বেড়ায়। আচ্ছা মামা, যদি ভূত দেখা যায়? দূর ব্যাটা। ভূত দেখবি কোথা থেকে? ভূত বলে কিছু থাকলে তো দেখবি। আমিও মাথা নাড়লাম মামার কথায়। সত্যি তো, ভূত তো আসলেই নাই। তাহলে আসবে কোথা থেকে?

রাতের খাবার শেষ হলে আমি অধীর আগ্রহে বসে রইলাম মামার ডাক কখন আসে তার জন্যে। একসময় অপেক্ষার ক্ষণ শেষ হলো। রাত বারোটা বাজলো ঘড়িতে। মামা আর আমি ঢুকলাম মামার গবেষণাগারে। মামা যন্ত্রটার পেছন দিক খুলে চারটা ব্যাটারি লাগালেন। আমি এবার বুঝলাম আমার ভুল। কালরাতে মেশিনটা কেনো জ্বলেনি তা পরিষ্কার হয়ে গেলো আমার কাছে। মামা এবার মেশিনটার সামনে একটা লাল সেলোফেন কাগজ লাগালো। তারপর স্যুইচ অন করলো। অমনি লাল আলো বের হয়ে এলো। এক অদ্ভুত রহস্যময় লাল আলো। মনে হয় এক যাদুনগরে আমরা আছি। মামা এবার স্যুইচ অফ করে মেশিনটা আস্তে আস্তে দেয়ালের দিকে তাক করালেন। মনে হলো এখুনি দেয়ালের বুক চিরে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেবেন দেয়ালের ওপারে জন্তুর বুক। বাইরে একটা আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ঝিঁঝিঁর ডাক। গ্রামে এ রকম হাজারো আওয়াজ শোনা যায়। মাঝে মাঝে পাতার শন্ শন্ আওয়াজও শুনতে পাচ্ছি। আজকের রাতটা মনে হচ্ছে হাওয়ার রাত। হাওয়ার দাপটে গাছগুলো দুলছে থেকে থেকে। মামা আমাকে আধা ঘণ্টা ধরে যন্ত্রটার প্রকৌশল বুঝাতে লাগলেন। আমিও বাধ্য ছাত্রের মতো মনোযোগ দিয়ে মামার কথা শুনছি। একসময় মামা বললেন, চল্ আমরা এবার স্যুইচ অন করি। ঘরের ভিতর সব আলো নিভিয়ে দিলাম। এমনকি ডিমলাইটের আলোও নিভানো হলো। ডিমলাইটের আলো থাকলে লাল আলো কাজ করতে পারে না। যাই হোক, স্যুইচ অন করা হলো। আস্তে আস্তে যন্ত্রটা লাইন বরাবর আনা হলো। কী আশ্চর্য! ভেতরের দেয়াল ভেদ করে বাইরের গাছপালা লাল আলোয় দেখা যাচ্ছে পরিষ্কার। মামা ধীরে ধীরে বাড়ির ঘাটার দিকে আলো ফেললেন। কিছুই নাই তেমন। শুধু ঘাটার দেবদারু গাছ আর মধুমঞ্জরিলতার ফুল দেখা যাচ্ছে। আস্তে আস্তে একটা শেয়াল দেখা গেলো। এরপর আরো দুটো শেয়াল কোথা থেকে জানি বের হলো। হঠাৎ কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাক শোনা গেলো। মামা একটু নড়েচড়ে বসলেন। বললেন, মনে হয় গ্রামে চোর ঢুকেছে। না হলে কুকুর এতো ঘেউ ঘেউ করছে কেনো? সময় টিক টিক করে যাচ্ছে। আমি একটু একটু করে উৎসাহী হয়ে উঠছি। দেখি তাহলে চোর কি না। ডাকতে ডাকতে চারটা কুকুর বাড়ির ঘাটা দিয়ে ঢুকলো। কুকুরগুলো আমি সকালে দেখেছি গ্রামের রাস্তায়। মামা একটু উসখুস করা শুরু করলেন। বললেন ফিসফিস করে, ভাগ্নে দেখ্ কারা আসছে! আমি অবাক হলাম। ভয়ও পেতে শুরু করলাম। ওমা! এ যে দেখি ভূত! বুকের খাঁচা দেখা যাচ্ছে। পায়ের হাড়, হাতের হাড়, মাথার খুলি সব দেখা যাচ্ছে। জীবন্ত কঙ্কাল হেঁটে হেঁটে লম্বা কদম ফেলে ঢুকছে নানীদের ভিটায়। আমি ভয়ে মামাকে জড়িয়ে ধরলাম। মামাও বিড়বিড় করে কী জানি বলতে শুরু করলেন। স্লো মোশনে একটা, দুইটা না না তিনটা জীবন্ত কঙ্কাল হাঁটছে উঠোনে আর হাঁ হাঁ হাঁ করে হাসছে। মামা আমার দিকে তাকায় আর আমি তাকাই মামার দিকে। কঙ্কাল ভূতগুলো মনে হচ্ছে দেয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকবে। আমি ভয়ে গোঙাতে থাকি। মামাও গোঙাতে থাকে। তারপর আর কিছু মনে নেই। সকালে আমাকে আর মামাকে মেশিনসহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে নানী জাগিয়ে তোলে। আমি আর মামা নানীকে কোনো কথা না বলে একজন আরেকজনের মুখের দিকে চেয়ে থাকি। নানী যেনো আমাদের কী বলতে এসেছিলেন। কিন্তু আমাদের চিৎপটাং দেখে তিনি ভুলে গেছেন যা বলতে এসেছিলেন। নাশ্তার টেবিলে নানীর ভুলে যাওয়া কথা মনে পড়লো। তিনি মামাকে বললেন, শুনছস্, গ্রামে নাকি কালরাত্রে চোর এসেছিলো। মামা আর আমি নানীর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকি। আমি নানীকে প্রশ্ন করি, কেমনে জানলা নানী? নানী বললো, চোরেরা নাকি ভূত সেজে আসছিলো। তাদের ভূতের পোশাক যাওয়ার সময় তারা রেখে গেছে গ্রামের রাস্তায়। নানীর কথা শোনামাত্রই আমি আর মামা হো হো করে হেসে উঠলাম। নানী কিছু না বুঝে বোকার মতো আমাদের দুজনের মুখে চেয়ে রইলো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়