প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৫৩
শিক্ষা ও শিল্পপতিদের দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও ফরিদগঞ্জ কর্মসংস্থানে পিছিয়ে
সারা বাংলাদেশে ফরিদগঞ্জ উপজেলা একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই উপজেলায় যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যে কোন ধরনের শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার মতো পরিপূর্ণ সম্পত্তি এবং পরিবেশ রয়েছে। এবং যাতায়াতের সুব্যবস্থা ও রয়েছে। কারণ উপজেলাটি একটি বেড়িবাঁধ এলাকা। অনেক বড় ধরনের বন্যা হলেও এ উপজেলায় পানি ঢোকে শিল্প-কারখানা নষ্ট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।
|আরো খবর
উপজেলায় পাঁচ লাখের উপরে নারী পুরুষ রয়েছে। কিন্তু ফরিদগঞ্জ উপজেলা শিল্পপতি ও শিক্ষার দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও কর্মসংস্থানের দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে অনেক বেশি। উপজেলায় অনেক বড় বড় শিল্পপতি, ব্যাংকার, সচিব, ডাক্তার, সাংবাদিক, শিক্ষক, এবং সরকারী কয়েকটি দপ্তরের প্রধান ও ছিলেন এ উপজেলায়। কিন্তু তারা কেউ কখনো এলাকার শিক্ষিত বেকার ছেলেদের কথা ভাবেনী। তারা শুধু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে এলাকায় এসেছে এবং ভালো শিক্ষিত ছেলেদের দ্বারা বিভিন্ন অপকর্ম করিয়ে এলাকায় বিভিন্ন রকমের ধান্দার সৃষ্টি করে দিয়েছেন। বিনিময়ে এই ছেলেরা এলাকায় রাজনৈতিক দলের নেতা নামে চিহ্নিত মাস্তান রূপে পরিচিত হয়েছে। আর যারা এমনটা করিয়েছেন তারা রাজনৈতিক দলের অনেক বড় জায়গায় নাম লিখিয়ে স্বার্থ হাসিল করে নিজের জায়গায় চলে গেছেন।
শুধু এই আমলেই নয়, গত ৫০ বছর ধরে একই ধারাবাহিকতায় স্থিতিশীল রয়েছে এই উপজেলা। উপজেলায় দু-একজন শিল্পপতি বিভিন্ন রকম সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে কোটি কোটি টাকার দান-খয়রাত ও মসজিদ-মাদ্রাসা করে দিলেও মনে শান্তি নেই শিক্ষিত বেকার ছেলেদের মা-বাবার। ওইসব মা-বাবারা চাইছেন শিল্পপতিরা এলাকায় কোন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করুক।
উপজেলায় কোন প্রকার উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানা নেই। ফরিদগঞ্জে এমন অনেক অর্থশালী ব্যক্তি রয়েছেন যাদের টাকার হিসাব নিজেরাও জানেন না। এধরনের অর্থশালী ব্যক্তিরা একটু চেষ্টা করলেই উপজেলাটি গড়ে উঠতে পারে একটি আত্মনির্ভরশীল এলাকা। দূর হতে পারে বেকার সমস্যা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। সৃষ্টি হতে পারে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ।
উপজেলার বাজারগুলোর হোটেল-রেস্তোরাঁয়, মিনি মার্কেট ও বিভিন্ন দোকানের সামনে বসে থাকা শিক্ষিত বেকার যুবকদের বলতে শোনা যায় শিক্ষা গ্রহণ করে বয়স শেষ করলাম। অর্থ মামা ও দুলাভাই না থাকায় চাকরি পাই না। যদি আমাদের এলাকার শিল্পপতিরা সবাই মিলে বেকারদের কথা ভেবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন, এবং উৎপাদনমুখী কলকারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতেন, তাহলে একদিকে যেমন বেকার সমস্যা দূর হতো অন্যদিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চুরি-ডাকাতি, অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হতো।
এই উপজেলার ফরিদগঞ্জ সদর, চান্দ্রা বাজার, রুপসা বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, মুন্সিরহাট, কালির বাজার, গোয়ালভাওর বাজার সবচাইতে উৎপাদনমুখী ও ব্যস্ততম বাজার। সকলের বিশ্বাস শিল্পপতিরা যদি তাদের সুন্দর মন নিয়ে কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করে এবং তাদের পছন্দমতো ভূমি চান তাহলে তা দিতে কেউ অস্বীকার করবে না। ফরিদগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল শিক্ষিত বেকার ছেলেদের পরিবার আশায় আছে, কবে আসবে তাদের সেই দিন।