মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৮:৩৭

গাছতলা কেন্দ্রীয় ঈদগাহকেন্দ্রিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে বাগাদী দরবার শরীফ

সোহাঈদ খান জিয়া

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নে চৌরাস্তা বাজারের পাশেই নিজগাছতলা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বাগাদী দরবার শরীফের পীর সাহেব হুজুরের প্রতিষ্ঠিত পীর আলহাজ্ব সালামত উল্যাহ খান (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ, যেখানে শতাধিক বছর ধরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এটি জেলার অন্যতম বৃহত্তর ঈদগাহ। এ ঈদগাহ শুধু একটি নামাজের স্থান নয়, এটি ধর্মীয়, ঐতিহ্যগত এবং সামাজিক বন্ধনের এক অনন্য প্রতীক। প্রতি বছর এই ঈদগাহে ৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। যা ইসলামী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

উপমহাদেশের অন্যতম আধ্যাত্মিক দরবারগুলোর মধ্যে বাগাদী দরবার শরীফ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। জৈনপুর ও ফুরফুরা শরীফের খেলাফতপ্রাপ্ত মূলধারার একটি শাখা এই দরবার। যা পীরে কামেল শাহসুফি আলহাজ্ব মাওলানা সালামত উল্যাহ খান (রহ.)-এর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁর ইসলাম প্রচার ও ধর্মীয় শিক্ষার অবদান চাঁদপুর জেলাসহ আশপাশের অঞ্চলগুলোতে সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

শতাধিক বছর আগে এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর আলহাজ্ব আল্লামা সালামত উল্যাহ খান (রহ.) ৭ গ্রামের মুসল্লিদের নিয়ে নিজগাছতলায়

কেন্দ্রীয় ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। এই ঈদগাহ শুধু নামাজ আদায়ের স্থানই নয়, এটি ৭ গ্রামের মানুষের ধর্মীয় ঐক্য ও পারস্পরিক বন্ধনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বংশ পরম্পরায় এই ঈদগাহে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন দরবার শরীফের পীর সাহেবগণ।

পীরে কামেল শাহসুফি আলহাজ্ব আল্লামা ছালামত উল্যাহ খান (রহ:) ও তাঁর সাহেবজাদাগণ পীরে কামেল শাহসুফি আল্লামা ছায়াদ উল্যাহ খান বড় হুজুর (রহ.), পীরে কামেল আলহাজ্ব আল্লামা হেদায়াত উল্যাহ খান (রহ.) মেজো হুজুর ও পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা নজীব উল্যাহ খান (রহ.) সেজো হুজুর দীর্ঘকাল ধরে ইমামতি করেছেন। ছোট হুজুর পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা ছফি উল্যাহ খান (রহ.)-এর পরবর্তীকালে হুজুরের নাতি পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা একেএম নেয়ামত উল্যাহ খান ও পীরে কামেল শাহসুফি আলহাজ্ব আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহ.) এই ঈদগাহে ঈদের নামাজের ইমামতি করেন।

ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শতাব্দীর প্রাচীন এই ঈদগাহে এ বছর ঈদের প্রধান জামাতের ইমামতি করবেন মরহুম পীরে কামেল আলহাজ্ব আল্লামা আরিফ উল্যাহ খান (রহ.) পীর সাহেব হুজুরের বড়ো সাহেবজাদা ও খলিফা, বাগাদী দরবার শরীফের দায়িত্বশীল পীরজাদা আলহাজ্ব আল্লামা আশেকুল আরেফিন সিদ্দিকী।

ঈদ উপলক্ষে বাগাদী দরবার শরীফ থেকে বিশেষ ঈদ মিছিল বের করা হয়। যেখানে হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এই মিছিল যেনো এক আনন্দের ঢেউ।

দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর সাহেবের সময় থেকে চলে আসা এই মিছিল এখনো অব্যাহত রয়েছে। এটি কেবল আনন্দ উদযাপনের একটি অংশই নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সংহতি ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রচারের একটি শক্তিশালী মাধ্যম।

ঈদ মিছিলটি সাধারণত দরবার শরীফ থেকে শুরু হয়ে ঈদগাহের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় মুসল্লিরা তাকবির, তাহলিল ও ইসলামী স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন।

বাগাদী দরবার শরীফের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন চাঁদপুরের মাননীয় জেলা প্রশাসক। এছাড়া এ বছর কার্যকরী কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মিজানুর রহমান খান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন বাগাদী দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ও শিল্পপতি আলহাজ্ব সাইফুল্লাহ খান নোমান।

৭ গ্রামের মুসল্লিদের নিয়ে গঠিত একটি শক্তিশালী পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ঈদগাহের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়