প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ২১:৪৯
গরমে কদর বেড়েছে আখের রস ও তালশাঁসে
বাইরে পা রাখলেই গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা, জ্বালা ধরানো গরমে পুড়ছে দেশ। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছুঁয়েছে দেশের কোথাও। দাবদাহের হাত থেকে আপাতত রেহাই নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৈশাখের শুরুতেই গলদঘর্ম দশা মানুষের। সূর্যের রক্তচক্ষু থেকে একটু শান্তি পেতে কদর বেড়েছে আখের রস ও তাল শাঁসে।
|আরো খবর
গরম থেকে রেহাই পেতে সকলেই ঠান্ডা পানীয়র প্রতি আকৃষ্ট হন। সাময়িক শান্তির জন্যে অনেকেই রাস্তায় আখের রসে তেষ্টা মেটান। বিশেষজ্ঞরাও আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন। গরমের সময় শরীর ঠান্ডা রাখতে আখের রস অত্যন্ত উপযোগী। তবে আখের রসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে সম্পর্কে জানা না থাকলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
ছেংগারচর বাজারে আখের রস বিক্রেতা জানান, বরফ মিশিয়ে আখের রস বিক্রি করছি। গরমে আখের রসের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে কষ্ট হয়। ক্রেতারা জানান, এ প্রচণ্ড গরমে আখের রসের গ্লাসে চুমুতে যেন স্বস্তি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রত্যেক জিনিসেরই ভালো এবং মন্দ দুই-ই রয়েছে। তাই জেনে রাখা ভালো যে দু গ্লাসের বেশি আখের রস পান করলে স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। পুষ্টিবিদরা বলেন, অতিরিক্ত আখের রস খেলে ডায়াবেটিস, ক্যাভিটি, ডায়ারিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
গরমে রাস্তার ধারে যে আখের রসের দোকান গজিয়ে ওঠে সেখান থেকে রস পান করলে সংক্রমণের শিকার হতে পারেন। আসলে ওই দোকানগুলোতে ভালোভাবে আখ না ধুয়ে মেশিনে রস করে ছেঁকে গ্লাস ঢেলে দিয়ে দেওয়া হয়। এর থেকে অনেক ধরনের পরজীবী এবং ব্যাকটেরিয়া সহজেই আপনার পেটে পৌঁছে যেতে পারে। ফলে শরীর খারাপ হতে পারে।
প্রচণ্ড গরমে সব জায়গায় তালশাঁসের কদর বেড়েছে। সব বয়সের মানুষের কাছে ফলটি বেশ প্রিয় খাবার হয়েছে। রাস্তার ধারে বা ফুটপাতে বসে থাকা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ক্রেতারা এই ফল কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। তীব্র দাবদাহে একটু স্বস্তি পেতে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তালশাঁস। মুখরোচক খাবার তালের নরম কচি শাঁস খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বর্তমানে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে এই তালশাঁস। চাঁদপুর শহর থেকে শুরু করে ৮টি উপজেলা সদরসহ গ্রাম অঞ্চলের মোড়ে মোড়ে বিক্রেতারা বিক্রি করছেন তালশাঁস। কোনো কোন বিক্রেতারা ভ্যানযোগে পাড়া বা মহল্লায় ঘুরে ঘুরে এই তালশাঁস বিক্রি করছেন।
ছেংগারচর বাজারে তালশাঁস বিক্রেতা রহম আলী জানান, প্রতি বছর এ সময়ে তালশাঁস বিক্রি করে ভালোভাবেই সংসার চালাচ্ছি। বৈশাখ মাস থেকে জৈষ্ঠ্যের শেষ পর্যন্ত চলে তালশাঁস বিক্রি। এবার প্রচণ্ড গরম থাকায় তালশাঁসের চাহিদা বেশি রয়েছে। প্রকার ভেদে প্রতিটি তালশাঁসের পিচ বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। আরেক বিক্রেতা রহমান জানান, শৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারীরা প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে ভিড় করছেন তালশাঁস বিক্রেতাদের কাছে। তবুও মৌসুমি ফল হওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর, ভেজালমুক্ত ফল বলে নিজেদের খাওয়ার পাশাপাশি পরিবারের ছোটদের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।
ডাঃ সায়মা আলম জুঁই জানান, তালশাঁস ত্বকের জন্য উপকারী। কচি তালের শাঁসে লিভারের সমস্যা, চুলপড়া রোধে সহায়তা করে। তালশাঁসে রক্ত শূন্যতা দূরীকরণে দারুণ ভূমিকা রাখে। তালশাঁসে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। তাই মৌসুমি ফল তালশাঁস উপকারী।