শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

সেই রাব্বির হাতে ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
মিজানুর রহমান ॥

জাতীয় শোক দিবসের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচ লাখ টাকার অনুদানের চেক পেলো চাঁদপুরের অসহায় পরিবারের সেই ছোট্ট শিশু রাব্বি। যার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এই চেক রাব্বিসহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেবার পর রাব্বি এখন অনেক ভালো আছে। চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রামদাসদী পীর বাদশা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে সে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তার পরিবার ঘরও পেয়েছে। ভবিষ্যতে যেনো অর্থের অভাবে পড়ালেখা বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্যে রাব্বিকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ৫ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেয়া হয়েছে।

১৫ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা বারোটায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি শিশু রাব্বির হাতে তার বাবা-মা ও বোনের উপস্থিতিতে শিক্ষা উপকরণসহ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থের চেক তুলে দেন। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পৌর মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর মানবিকতায় ১১ বছরের অসহায় রাব্বি ও তার পরিবার খুঁজে পেলো নতুন ঠিকানা। অর্থের অভাবে তার আর লেখাপড়া বন্ধ হবে না। এজন্যে শিশু রাব্বি ও তার মা-বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ জুলাই জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সাধারণ রোগীর মতো ১০ টাকার টিকিট কেটে চোখের চিকিৎসা নেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সে সময় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজন, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় ছবি তোলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য করেন, ভিড়ের মাঝে একটি শিশু দাঁড়িয়ে দূর থেকে তাঁকে সালাম দেয়। তিনি শিশুটির কাছে গিয়ে তার নাম পরিচয় জানতে চান। তিনি শিশুটিকে পরম মমতায় আদর করেন। তখন শিশুটি জানায় তার নাম রাব্বি। তিনি ছোট্ট রাব্বির কাছে জানতে চান, সে কী করছে, কার সঙ্গে হাসপাতালে এসেছে, কোন্ ক্লাসে পড়ছে? ১১ বছর বয়সী রাব্বি প্রধানমন্ত্রীকে জানায়, সে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের ক্যান্টিনে কাজ করে এবং সেখানেই থাকে। তার বাবা মারা গেছে। ক্যান্টিনে যোগ দেয়ার আগে সে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। রাব্বি প্রধানমন্ত্রীকে বলে, ‘আমি চাঁদপুরে মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাই। আবার পড়ালেখা শুরু করতে চাই। মা রাবেয়া বেগম সুতার কারখানায় কাজ করতো। রাব্বির সৎ-বাবা জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুর। প্রধানমন্ত্রী রাব্বির কথা শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি তার শিক্ষা ব্যয়ের দায়িত্বগ্রহণ করেন এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থাগ্রহণ ও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান একটি গাড়ি পাঠিয়ে ওইদিন রাতেই রাব্বিকে চাঁদপুরে তার মায়ের কাছে নিয়ে আসেন। রাব্বির মা রাবেয়া বেগমের নামে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘর প্রদান করা হয়েছে। রামদাসদী আশ্রয়ণ কেন্দ্রের পাশেই পীর বাদশা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাব্বিকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে এবং একজন সহকারী শিক্ষককে প্রাইভেট টিউটর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক চাঁদপুরের নির্দেশনা মোতাবেক চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাব্বিকে দুই সেট জামা ও প্যান্ট, ১টি স্কুল ব্যাগ, ১টি ওয়াটার বোতল, এক জোড়া মোজাসহ জুতা প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া ভবিষ্যতে যেনো অর্থের অভাবে রাব্বির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্যে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী এবং জেলা প্রশাসকের আর্থিক সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাঁদপুর সদর এবং রাব্বির মায়ের যৌথ স্বাক্ষরে সোনালী ব্যাংকে রাব্বির জন্যে ৫ লাখ টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজিট এবং একটি সঞ্চয় হিসাব খোলা হয়েছে। সেখান থেকে রাব্বি প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা লভ্যাংশ পাবে। এই টাকা দিয়েই তার লেখাপড়া এগিয়ে যাবে। রাব্বির উচ্চশিক্ষা শেষ হলে তার কর্মসংস্থানের জন্যে এই ফান্ড ব্যবহার করতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়