সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫  |   ২৮ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   ৯ বছরের খরা কাটাল বাংলাদেশ
  •   চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে অজ্ঞাত বৃদ্ধের মৃত্যু
  •   চাঁদপুর বিআরটিএ কার্যালয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নেপথ্যে--
  •   হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার দাপটে বিচার পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তরা

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫৯

কৃষি বাঁচানোর দাবিতে ফরিদগঞ্জে কৃষক সমাবেশে বক্তারা

বাস্তবতা হলো, এদেশের কৃষকদের কথা কেউই ভাবে না

প্রবীর চক্রবর্তী।।
বাস্তবতা হলো, এদেশের কৃষকদের কথা কেউই ভাবে না

চাঁদপুর সেচ প্রকল্পভুক্ত চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ৬টি উপজেলার কৃষক, ক্ষেতমজুর ও মৎস্যজীবীদের রক্ষা ও সিআইপি সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে ফরিদগঞ্জে কৃষক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

রোববার (২০ জুলাই ২০২৫) ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব ও ওনুআ চত্বরে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সি.আই.পি.) অভ্যন্তরে ডাকাতিয়া নদী ও খাল খনন কৃষক সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ্আলমগীর হোসেন দুলাল এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মৎস্যজীবী সংগ্রাম কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম কুট্টি, সবজি কৃষক নুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কৃষক খোরশেদ আলম, তবারক উল্ল্যাহ, নোমান হোসেন, মিঠুন পাটওয়ারী, মৎস্যজীবী অবণী বর্মন ও রহিমা আক্তার কলি।

বক্তারা বলেন, বিগত বছর ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় সিআইপি বাঁধের ভেতরের আমন ধানসহ সকল কৃষি ফসল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়। মৎস্যজীবীদের শত শত কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। এর একমাত্র কারণ, গত ৩৫ বছরেও সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরের কোনো খাল খনন হয়নি। একশ' কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেচ প্রকল্প বাঁধের চারপাশে একশ' কিলোমিটার বোরোপিট খাল রয়েছে। সেগুলো এবং ডাকাতিয়া নদী দখলে দূষণে ও কচুরিপানা জটে বিপর্যস্ত।

আমরা এতোদিন ধারাবাহিক কর্মসূচির মধ্যে একাধিক সংবাদ সম্মেলন, লিফলেট বিতরণ, হাট সভা, পথসভা, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্মারক লিপি পেশ করেছি।

আমাদের দাবি সি.আই.পি.'র সংকট স্থায়ীভাবে নিরসনে গৃহীত কর্ম পরিকল্পনা দ্রুততার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন হোক। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ, কৃষি ঋণ মওকুফ, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার, প্রতি বছর ১ জানুয়ারি প্রকল্পের অভ্যন্তরে পানি সরবরাহ করা, সিআইপির অভ্যন্তরে প্রতিটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সদা তৎপর থাকার দাবি তো রয়েছেই।

সভাপতির বক্তব্যে সিআইপি কৃষক সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন দুলাল বলেন, আমলাদের কথা সংবিধানে বলা না থাকলেও তারাই আজকে সর্বেসর্বা। অথচ সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, সকল কর্মকর্তা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এদেশের কৃষি, কৃষক, মৎস্যজীবীদের বাঁচাতে জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে কেউই বস্তুত কাজ করছে না। যা হচ্ছে তা শুধুমাত্র আইওয়াশ। বাস্তবতা হলো, এদেশের কৃষকদের কথা কেউই ভাবে না। অথচ কৃষি বাঁচলেই এদেশ বাঁচবে তা অনেকেই বেমালুম ভুলে গেছে। সেচ প্রকল্প তৈরির উদ্দেশ্য কী ছিলো, বর্তমানে ক’জন জানেন। দুটি জেলার ছয়টি উপজেলার দীর্ঘ একশ' কিলোমিটার বাঁধ আপাত দৃষ্টিতে আমাদেরকে বন্যা থেকে বাঁচালেও অপরিকল্পিত পরিকল্পনা, এক বিভাগের সাথে আরেক বিভাগের সমন্বয়হীনতায় কৃষি রক্ষার প্রকৃত স্বার্থ অধরাই থেকে যাচ্ছে। বিগত স্বৈরাচার সরকারকে উৎখাতে জুলাই আন্দোলনে ৮শতাধিক নিরীহ মানুষ প্রাণ দিলেও তাদের স্বপ্ন এখন ফিকে হয়ে গেছে। ড. ইউনূস সংস্কারের নামে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। নির্বাচন কোন্ পদ্ধতিতে হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর জমজমাট রাজনীতি চলছে। কিন্তু এদেশের খেটেখাওয়া মানুষের দুবেলা দুমুঠো ভাতের নিশ্চয়তা কীভাবে হবে তার জন্যে কারোই ভ্রূক্ষেপ নেই। আলু চাষীরা বেশি দামে বীজ কিনে কম দামে আলু বিক্রি করে। আখ চাষীরা আখ বিক্রি করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান। এবারো ধান ঘরে তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে কৃষক সন্দিহান। গত ক'দিন আগে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আবারো মৎস্য ব্যবসায়ীরা বিপদের মুখে পড়েছিল। সেসবে কারো খেয়াল রয়েছে? এটা সত্য, দু-একজন সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এসব নিয়ে ভাবেন বলেই আমরা কিছু কাজ করতে পারছি। তবে যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কৃষি ও কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। তবেই বাংলাদেশ বাঁচবে। আমরা এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি, বাক স্বাধীনতার মুক্তি, ভালভাবে বেঁচে থাকার জন্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। ওই ২২ পরিবার যা আজ হাজার পরিবারে পরিণত হয়েছে তাদের জন্যে যুদ্ধ করিনি। কিন্তু স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে ওই তাদেরই।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়